ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

‘সেফুদা’র বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পথে বাংলাদেশি কমিউনিটি

প্রবাসী দুনিয়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:১৩, ২০ এপ্রিল ২০১৯  

বিভিন্ন ভঙ্গিতে সিফাত। কিশোর বয়স থেকেই তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি স্বজনদের    -ফাইল ফটো

বিভিন্ন ভঙ্গিতে সিফাত। কিশোর বয়স থেকেই তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি স্বজনদের -ফাইল ফটো

ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে ফেসবুকে নিয়মিত লাইভ ভিডিও ব্লগ পোস্ট করেন সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদা। সম্পপ্রতি ফেসবুকে লাইভ ভিডিওতে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরান নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটি তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা এ ব্যাপারে গতকাল (শুক্রবার) একটি কমিটি তৈরি করেছে।

বিষয়টি নিয়ে জুমার নামাজের পর বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা ভিয়েনায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফরের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।

রাষ্ট্রদূত এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে জানান, ইস্টারের ছুটির পর বিষয়টি কূটনৈতিক চ্যানেলে অস্ট্রীয় সরকারকে জানাবেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, ‘সেফাত উল্লাহ সাহেবের যেসব কথা ইউটিউবে পোস্ট হয়েছে, তাতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অবমাননা করার বিষয় রয়েছে। এতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ রয়েছে... আমরা একইসাথে উদ্বিগ্ন যে বিষয়টি নিয়ে যেন ভিয়েনাতে বসবাসরত অন্যান্য দেশের মুসলিমদের মধ্যে অহেতুক কোনো উত্তেজনার সৃষ্টি না হয়।’

গত বুধবার (১৮ এপ্রিল) ফেসবুক লাইভে এসে অস্ট্রিয়াবাসী সেফাত উল্লাহ যিনি সেফুদা নামেই সোশাল মিডিয়াতে বেশি পরিচিত, কোরান নিয়ে, ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেন বলে অভিযোগ ওঠে। মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি ওই বক্তব্য দেন।

সেফুদার বক্তব্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রবল সমালোচনাও শুরু হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় তার বিচার দাবি করে ছোটোখাটো বিক্ষোভ হয়েছে বলে বিভিন্ন মিডিয়াতে খবর বেরিয়েছে।

কিন্তু পরের এক ভিডিও পোস্টে সেফাত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন, বুধবার লাইভ ভিডিওতে কোরানের পাতা ছেঁড়েননি তিনি। উর্দু একটি বইয়ের পাতা ছিঁড়েছিলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে শুধু ধর্ম নয়, ফেসবুকে লাইভ ভিডিওতে সেফাত বাংলাদেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদার বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফরও জানিয়েছেন, সেফাত উল্লার সাথে তাদেরও কোনো যোগাযোগ নেই।

সেফুদা প্রসঙ্গে ভিয়েনা প্রবাসী বাংলাদেশি আবিদ হোসেন খান জানান, এক ধরনের একাকী জীবন যাপন করেন তিনি। বেসামাল কথাবার্তার কারণে বাংলাদেশিরা তাকে এড়িয়ে চলেন। তার এক ছেলে ইংল্যান্ডে থাকেন। স্ত্রী থাকেন বাংলাদেশে। 

চাঁদপুরের সন্তান সেফুদা পাগলা গারদেও ছিল!
খোঁজ-খবরে জানা গেছে, সিফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদা চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ১৩ নং সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড চেড়িয়ারা গ্রামের মৃত হাজী আলী আকবরের পুত্র। সেফুদার বাবা তিনটি বিয়ে করেন। সবঘর মিলে তাদের ভাই-বোন ১৫ জনের অধিক। এর মধ্যে সিফাতের আপন ভাই-বোনের সংখ্যা আটজন। তবে কারো সঙ্গে তার সর্ম্পক নেই বলে স্বজনরা জানান।

প্রায় ২২ বছর আগে সিফাত অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় চলে যান। পরিবারের অবাধ্য এই সেফুদা একজন বিকারগ্রস্ত প্রতিবন্ধী বলে নিজগ্রামের লোকজন জানান।

শাহরাস্তি উপজেলার চেড়িয়ারা গ্রামের সেফুদার চাচাতো ভাই রেদোয়ান হোসেন সেন্টু সংবাদমাধ্যমকে জানান, ছোটবেলা থেকেই পরিবারের অবাধ্য ছিল সিফাত উল্লাহ। তাকে একবার পাগলা গারদ ও একবার জেলখানায় পাঠানো হয়েছিল বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। তার বাবা আলী আকবর কোনো সম্পত্তি তাকে দেননি। ২৫ বছর আগে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেছিলেন তাকে।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

প্রবাসী দুনিয়া বিভাগের সর্বাধিক পঠিত