ঢাকা, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

লোভ-প্রতারণার নির্মম প্যাঁচ: বলির পাঁঠা যখন আপন ভাই

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩২, ২২ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ১১:০৩, ১৮ মে ২০১৬

আহমেদাবাদ পুলিশ সহোদর দুই ভাইকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সহোদর অপর ভাই ভারত জালাকে (৪৫) হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

ঘটনা তদন্তে জানা গেছে, গুজরাট প্রদেশের আহমেদাবাদের মুবারা গ্রামের ওই দুই ব্যক্তি তাদের অসুস্থ ভাইটির জীবন বীমা করিয়েছিল। বীমার পরিমাণ বেশ মোটাই- প্রায় তিন কোটি রুপি। এরপর মাসে ছয়েক আগে নিজের ঘরেই বিদ্যুতায়িত করে ওই ভাইকে হত্যা করে ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’রূপী দুই ভাই। ঘটনার পর তারা পুলিশকে জানায়, ভুলে বিদ্যুৎস্পর্শে মারা গেছে তাদের ‘চোখের মণি আদরের ভাইটি’। এরপর সময়মতোই তারা বীমার টাকা দাবি করে কোম্পানির কাছে।

 

লোভী ভাইদের কপালে গিট্টুটা এখানেই লেগে যায়। ময়না তদন্তে জানা যায় ওই মৃত্যু দুর্ঘটনাজনিত নয়, বরং তাকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। যদি প্রথম দিকে পুলিশ এ ঘটনায় দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হিসেবে মামলা নিয়েছিল।

 

তবে পরবর্তীতে তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে ভারত যক্ষা আক্রান্ত ছিলেন। এ পর্যায়ে পুলিশ মরদেহের ময়না তদন্ত করায় এবং তদন্তে প্রদেশের ফরেনসিক সাইন্স বিভাগ ও বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিনিধিদেরও সম্পৃক্ত করে।

 

স্থানীয় পুলিশের অপরাধ বিভাগের ইন্সপেক্টর বিজে রাঠোর জানান, এটা ছিল পরিষ্কার একটি হত্যাকাণ্ড।

 

ইন্সপেক্টর রাঠোর জানান আরও পেছনের কাহিনী। নিহত ভারতের ভাই প্রদীপ জালাকে গ্রেফতারের পর তিনি পুলিশকে জানান, ভারত গুরুতর অসুস্থ জেনে স্থানীয় এক বীমা এজেন্ট তাদের সঙ্গে এসে পরিচিত হয়। তেজস বালন্ড নামের ওই বীমা প্রতিনিধি সাতটি আলাদা আলাদা বীমা কোম্পানিতে ভারতের নামে মোট ২.৯১ কোটি টাকার বীমার পলিসি করান। এ সূত্রে কাগজপত্রে দেখানো হয় ভারত একজন ব্যবসায়ী যার মাসিক টার্নওভার ৪ লাখ রুপি।  

 

এরমধ্যে ভারতের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে যায়। তিনি কয়েকদিন ধরে খাবার গ্রহণ করছিলেন না। এ অবস্থায় শিগগিরই রোগজনিত স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা ছিল তার। কিন্তু লোভে অন্ধ পরিবারের লোকজনের তর সইছিল না। ঝটপট বীমার টাকা হাতে পাওয়ার জন্য বিদ্যুতের ঝটকা দিয়ে তাকে হত্যা করে। এরপর ভাইয়ের মৃত্যুজনিত বীমার টাকা দাবি করে কোম্পানিগুলোর কাছে। একটি কোম্পানি ক্ষতিপূরণের ১৫ লাখ রুপি দিয়েও দেয়।

 

পুলিশ জটিল এই জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলার মাস্টারমাইন্ড বীমা এজেন্ট তেজস বালন্ডকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। বছর কয়েক আগে আহমেদাবাদের কনভা গ্রামে এ ধরনের আরও একটি ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ মনে করছে সেই ঘটনারও নাটের গুরু ছিল বালন্ড। সূত্র: টাইমসঅবইন্ডিয়া

 

নিউজওয়ান২৪.কম/একে          

অর্থ-কড়ি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত