ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

লুসিড ড্রিম: স্বপ্ন যখন নিজের নিয়ন্ত্রণে

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২২, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি


'ইনসেপশন’ চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন! বিখ্যাত পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলানের একটি মুভি এটি। মুভির চরিত্ররা স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। স্বপ্নের পরিবেশ কেমন হবে তাও নিজেরাই ঠিক করতে সক্ষম। স্বপ্নের মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে আরেকজনের অবচেতন মনের মধ্যেও। চুরি করে নিয়ে আসতে পারে অবচেতন মনের তথ্য। এমনকি অবচেতন মনে কোনো ধারণা বদ্ধমূল করে দিতে পারে তারা। এই শেষের ঘটনা নিয়েই মূলত মুভির কাহিনী। এরই নাম ইনসেপশন। 

তবে এগুলো করতে পারার পূর্ব শর্ত হলো লুসিড ড্রিম। স্বপ্নচারী ব্যক্তি স্বপ্নের মধ্যেই যদি বুঝতে পারেন যে তিনি স্বপ্ন দেখছেন তবে একে লুসিড ড্রিম বলে। এক সময় মার্কিন সরকার এমনই একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্বপ্নের মাধ্যমে তথ্য চুরি বা ইনসেপশন সম্ভব নয়। কিন্তু চাইলেই আপনি লুসিড ড্রিমকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। সেটা কীভাবে?

তার জন্য প্রথমে লুসিড ড্রিম দেখতে হবে! আপনি কখন লুসিড ড্রিম দেখবেন তা তো আর আগে থেকে বলা যায় না। তবে কায়দা করে আপনি লুসিড ড্রিম এর অভ্যাস তৈরি করে ফেলতে পারেন। একটি কৌশলের নাম হলো রিয়েলিটি চেক বা বাস্তবতার পরীক্ষা। দিনের যেকোনো সময় যখনই সম্ভব আপনার নিজের এবং পরিবেশের দিকে তাকিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করুন ‘আমি কি স্বপ্ন দেখছি?’ কাজটি যখন অভ্যাসে পরিণত হবে তখন এটি ঘটার সম্ভাবনা থাকবে স্বপ্নের মধ্যেও। 

স্বপ্নের মধ্যেই আমরা নিয়মিত এমন এমন জিনিস দেখি যেটা আসলে বাস্তবে সম্ভব নয়, যেমন সুপারম্যানের মতো উড়াউড়ি বা অনেক লম্বা লম্বা লাফ দিতে পারা‌। অবশ্য উল্টো ঘটনাও ঘটে। যেমন বেশি ভয় পেয়েও দৌড়াতে না পারা। যা-ই হোক রিয়েলিটি চেক করা অভ্যাস করে ফেললে আপনি সহজেই স্বপ্ন ও বাস্তবতার ফারাক ধরে ফেলে ধীরে ধীরে লুসিড ড্রিম দেখতে পারবেন।

আরেক উপায়ের নাম ওয়েক ব্যাক টু বেড বা জাগরণ থেকে বিছানায় প্রত্যাবর্তন টেকনিক। এক্ষেত্রে ঘুম থেকে ওঠার স্বাভাবিক সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগের সময়ে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন। এ সময় আমরা সাধারণত রেম (রেপিড আই মুভমেন্ট) ঘুমের মধ্যে থাকি। ঘুমের এই পর্যায়টি একটু দীর্ঘ ও গাঢ়। এলার্মের শব্দে জেগে উঠুন। প্রায় বিশ মিনিট পর আবার ঘুমিয়ে পড়ুন। এই বিরতির সময়ে সাম্প্রতিক ঘুমের স্মৃতি ভাবতে থাকুন বা বাকি অংশ লিখে রাখুন। সেটা এমন কিছু হলে ভালো হয় যেটা স্বপ্নকে বাস্তবতা থেকে আলাদা করতে সহায়ক হবে। এবার নতুন করে ঘুমিয়ে পড়লে আগের ঘুমের স্বপ্ন আবার শুরু হতে পারে।

প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে এই কৌশলগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানো সম্ভব। কিছু অ্যাপ ও স্লীপ মাস্ক আছে যেগুলো অডিও এবং ভিজুয়াল সিগন্যালের মাধ্যমে আপনাকে লুসিড ড্রিমের জগতে নিয়ে যেতে পারে। তবে অ্যাপগুলো শুধু নির্দিষ্ট সময় পরপর অ্যালার্ম দিয়েই দায়িত্ব শেষ করবে। তাই মূল ভরসা রাখতে হবে নিজের প্রতিই। আর একবার নিয়মিত লুসিড ড্রিম দেখা শুরু করলেই স্বপ্নের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের চাবিও চলে আসবে আপনার হাতে!

নিউজওয়ান২৪/এএস