ঢাকা, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের জানা-অজানা কিছু ঘটনা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৫০, ২৩ অক্টোবর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মহাবিশ্ব কতটুকু স্থান জুড়ে বিরাজমান? মহাবিশ্ব কি শুধু একটি? নাকি একাধিক? নাকি অগনিত? সুবিশাল এই মহাবিশ্বের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ জুড়ে আমাদের বসবাস এবং তার থেকেও ক্ষুদ্র হছে মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমদের জ্ঞান।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অসাধারণ অগ্রগতি হওয়া স্বত্ত্বেও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধিকাংশই আমাদের কাছে অজানা এবং রহস্যে ঘেরা। মহাবিশ্বের এসব রহস্য নিয়ে নিশ্চয়ই আমাদের কারো আগ্রহের কমতি নেই। চলুন জেনে নেয়া যাক এমন জানা-অজানা কিছু ঘটনা-

(১) মানুষ ও নক্ষত্রের যোগসূত্র: মানুষ ও নক্ষত্রের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে। মানুষের শরীরে থাকা প্রায় সব রাসায়নিক উপাদান সেগুলো না-কি এসেছে নক্ষত্র থেকে। কথাটা কিছুটা আজগুবি মনে হলেও এতে যুক্তি রয়েছে। ক্যালসিয়াম, কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন এবং প্রায় ৬০ প্রকার মৌলিক রয়েছে নক্ষত্রে। আর এসব উপাদান মানব শরীরেও বিদ্যমান।

(২) মহাশূন্যের ঘ্রাণ: কখনো কি মাথায় প্রশ্ন জেগেছে, মহাশূন্যে কি ঘ্রাণ আছে? থাকলে তার ঘ্রাণ কেমন? কতিপয় কৌতুহলী মানুষের মনে কিন্তু ঠিকই এমনই প্রশ্ন জেগেছে! আর তারা বিভিন্ন মহাকাশচারীদের অভিজ্ঞতা শোনার পর এ উত্তর বের করেছেন। আমরা অনেকেই ওয়েল্ডিং কাজের সঙ্গে পরিচিত, তাই না? ওয়েল্ডিংয়ের সময় এর আশেপাশে থাকলে যে ঘ্রাণ পাওয়া যায়, মহাশূন্য বা স্পেসের গন্ধটা ঠিক অমন!

(৩) বরফের গ্রহ: পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৩ আলোকবর্ষ দূরে একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা যার পুরো পৃষ্ঠটাই নাকি‘ বার্নিং আইস’এ আবৃত! খটকা লাগছে? আসল ঘটনাটা হচ্ছে, এই গ্রহের পৃষ্ঠে প্রচণ্ড চাপের কারণে পানি কঠিন অবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে, আর গ্রহ পৃষ্ঠে তাপমাত্রা অনেক বেশি বলে এই জমাট বরফ থেকে বাষ্প নির্গত হয়। তাই বিজ্ঞানীরা একে বলছেন ‘বার্নিং আইস’-

(৪) পৃথিবীও কিন্তু ব্ল্যাকহোল হতে পারে: আমরা যে সুন্দর পৃথিবীতে বাস করছি, তাও কিন্তু একটা ব্ল্যাকহোলে পরিণত হতে পারে। তবে এর আগে পৃথিবীকে বেশ শক্ত কিছু নিয়ম মানতে হবে। তার মধ্যে একটি হলো সর্বপ্রথম পৃথিবীকে একটি মার্বেলের আকারে পরিণত করতে হবে। পৃথিবীর সমস্ত ভর একই থাকবে, এবং এ সমস্ত ভরসহ এর আকার হবে একটা মার্বেলের মত। যদি কোনোভাবে এটা হয়ে যায়, তবে পৃথিবীও সর্বগ্রাসী ছোটখাট একটা ব্ল্যাকহোলে পরিণত হতে পারে।

(৫) মহাকাশে পানি ফোটালে যা হবে: সচরাচর পানি ফুটানোর সময় আমরা দেখি বুদবুদ আকারে অনেকগুলো পানির ফোঁটা পাত্রের উপরের দিকে উঠে এসেছে। কিন্তু কেউ যদি মহাকাশে কোনোভাবে পানি ফোটানোর চেষ্টা করে তাহলে একটামাত্র দানবাকৃতির বুদবুদ উঠে আসবে।

(৬) নক্ষত্রের মৃত্যু: রাতের আকাশে আমরা অসংখ্য নক্ষত্র দেখি। আবার অনেক নক্ষত্র আছে যেগুলো কিন্তু মৃত। আলো বিকিরণ করতে গিয়ে ধীরে ধীরে তারা নিঃশেষ হয়ে যায়। কিন্তু যদি তারা মৃতই হয় তাহলে আমরা রাতের আকাশে তাদের কীভাবে দেখি? কারণ এসব নক্ষত্রের বেশিরভাগই আমাদের থেকে শতকোটি আলোকবর্ষ দূরে। সেখান থেকে আলো এসে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগবে। বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পূর্বে তাদের নিঃসৃত আলো আমরা এখন রাতের আকাশে দেখছি, এই এতদিন পরে!

(৭) হারিয়ে যাওয়া মহাবিশ্ব: এই যে মহাবিশ্বের বিশালতা নিয়ে আমরা কথা বলছি, মহাবিশ্ব কিন্তু তার চেয়েও বিশাল! বিজ্ঞানীদের মতে মহাবিশ্বের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগই ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি রূপে আছে। আমাদের এই মহাবিশ্ব কিন্তু সম্প্রসারণশীল। এই প্রসারণশীল মহাবিশ্বের মাঝে আঠার মত কাজ করছে ডার্ক ম্যাটার। কিন্তু এই ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি হয়তো কোনোদিনই পরিমাপ করা সম্ভব হবেনা। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনই হাল ছাড়তে নারাজ।

(৮) যেখানে শুরু সেখানেই শেষ: কেউ কখনো মহাবিশ্বের একদম শেষ প্রান্তে চলে যেতে পারবেনা। যদি কখনো কেউ এই মহাবিশ্বের একটা নির্দিষ্ট স্থান থেকে সরলরেখা বরাবর হাঁটতে থাকে, তবে অনন্তকাল হাঁটার পর সে আবার তার শুরুর জায়গাতেই ফেরত আসবে। মহাবিশ্বের বিশালতার মাঝে কত ক্ষুদ্র আমাদের এ পৃথিবী। অথচ এই পৃথিবীর কত রহস্যই এখনো আমাদের অজানা। হয়তো একদিন পৃথিবীর সব রহস্যই ভেদ হবে। এর পাশাপাশি মহাবিশ্বের অসংখ্য অজানা আর অমীমাংসিত রহস্যের জটও খুলতে আরম্ভ করবে। মানব সভ্যতার বিজয় নিশান পুরো মহাবিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়বে!

নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ