ঢাকা, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত

বিভিন্ন উদ্ভিদ, ফল, তরুলতা ও গাছপালা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৪, ৬ নভেম্বর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

 

পবিত্র কোরআনুল কারীমে জ্ঞান-বিজ্ঞান, অতীত-আখ্যান ও বিভিন্ন হুকুম-আহকামের পাশাপাশি উদ্ভিদ, তরুলতা, গাছপালার প্রসঙ্গও এসেছে।

উদ্ভিদের প্রাণ ও বংশ বিস্তার, ফুলের পরাগায়ণ, বীজের অঙ্কুরোদগম, ফল পরিপক্ব হওয়া ইত্যাদি বিষয়ও পবিত্র কোরআনে স্থান পেয়েছে।

মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারমে ইরশাদ করেন,

فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ إِلَى طَعَامِهِ

মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক,

أَنَّا صَبَبْنَا الْمَاء صَبًّا

আমি আশ্চর্য উপায়ে পানি বর্ষণ করেছি,

ثُمَّ شَقَقْنَا الْأَرْضَ شَقًّا

এরপর আমি ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি,

فَأَنبَتْنَا فِيهَا حَبًّا

অতঃপর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য,

وَعِنَبًا وَقَضْبًا

আঙ্গুর, শাক-সব্জি,

وَزَيْتُونًا وَنَخْلًا

যয়তুন, খর্জূর,

وَحَدَائِقَ غُلْبًا

ঘন উদ্যান,

وَفَاكِهَةً وَأَبًّا

ফল এবং ঘাস

مَّتَاعًا لَّكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ

(সূরা আবাসা, আয়াত: ২৪-৩২)

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে প্রকৃতির বৈচিত্র্যময় কিছু দৃশ্যের কথা মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। যেন মানুষ মহান আল্লাহর কুদরতের কথা স্মরণ করে। মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

يُنبِتُ لَكُم بِهِ الزَّرْعَ وَالزَّيْتُونَ وَالنَّخِيلَ وَالأَعْنَابَ وَمِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

‘যিনি তোমাদের জন্য তা (পানি) দিয়ে শস্য, জাইতুন, খেজুরগাছ, আঙুর ও সব ধরনের ফল ফলান। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সূরা নাহল, আয়াত: ১১)

এছাড়াও পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন উদ্ভিদের নাম ও শ্রেণি উল্লেখ করেছেন। কয়েকটি সূরার নামকরণও করা হয়েছে উদ্ভিদের নামে। আবার কোনো কিছুর প্রমাণস্বরূপ কিংবা সাধারণ বর্ণনা হিসেবে এসেছে উদ্ভিদের নাম। সেগুলো এখানে উল্লেখ করা হলো-

> আঙুর ফল (আল-ইনাবু)। ‘এবং আঙুর ও শাক-সবজি।’ (সূরা আবাসা : ২৮)।

> আনার (আর-রুম্মান) । ‘সেখানে রয়েছে ফলমূল; খেজুর ও আনার।’ (সূরা রহমান : ৬৮)।

> ডুমুর (আত-তিন)। ‘ডুমুর ও জলপাই (বা তার গাছের) এর শপথ।’ (সূরা তিন : ১)

> খেজুর গাছ (আন-নাখিল) । ‘এবং শস্যক্ষেত ও দুর্বল ও ঘন গোছাবিশিষ্ট খেজুর বাগানে।’ (সূরা শুআরা : ১৪৮)

> বীজ-চারা বা শস্যক্ষেত (আজ-জারউ)। ‘এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন খেজুর গাছ ও বিভিন্ন স্বাদের খাদ্যশস্য।’ (সূরা আনআম : ১৪১)

> তাজা ও পাকা খেজুর (আর-রাতাবু)। ‘তুমি খেজুর গাছের কাণ্ড ধরে নাড়া দাও। তোমার ওপর তা ফেলবে পাকা তাজা খেজুর।’ (সূরা মরিয়াম : ২৫)।

> যেকোনো ফল (আল-ফাকিহাতু): ‘তাতে রয়েছে ফলমূল ও খোসায় ঢাকা খেজুর।’ (সূরা রহমান : ১১)।

> যেকোনো ফল (আস-সামারু): ‘খেজুর ও আঙুর ফলগুলো। তা থেকে তোমরা গ্রহণ করো নেশাদ্রব্য ও উত্তম রিজিক।’ (সূরা নাহল : ৬৭)

> জলপাই (আজ-জায়তুন): ‘ডুমুর ও জলপাই (বা তার গাছের) এর শপথ।’ (সূরা তিন : ১)

> লাউ বা কদু (আল-ইয়াকতিন): ‘আমি তার ওপর একটি লাউ গাছ উদ্গত করলাম।’ (সূরা সাফফাত : ৪৬)

> কুল বা বরই গাছ (আস-সিদরু): ‘কাঁটাবিহীন বরই গাছ তলায়।’ (সূরা ওয়াকিয়া : ২৮)

> ঝাউ গাছ (আল-আছলু) । ‘আমি তাদের বাগান দুইটিকে এমন দুই বাগানে পরিবর্তন করলাম, যেখানে রইল কিছু বিস্বাদ ফল, ঝাউ গাছ ও কুল গাছ।’ (সূরা সাবা : ১৬)

> তেঁতো ও বিস্বাদ খাবার (আল খামতু বা আরবি ভাষায় ‘আরাক’ নামক বিশেষ লতা গাছ।): ‘আমি তাদের বাগান দুইটিকে এমন দুই বাগানে পরিবর্তন করলাম, যেখানে রইল কিছু বিস্বাদ ফল, ঝাউ গাছ ও কুল গাছ।’ (সূরা সাবা : ১৬)

> পশুখাদ্য, গৃহপালিত ও বন্যপশু যে ফল খায় (আল-আব্বু): ‘তাতে উৎপন্ন করেছি ফলমূল ও ঘাস।’ (সূরা আবাসা : ৩১)

> শসা (আল-কিসসাউ): ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সূরা বাকারা : ৬১)।

> মটরকলাই বা গম (আল-ফুমু) : ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য— তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সূরা বাকারা : ৬১)

> সবজি বা যেকোনো উদ্ভিদ (আল-বাকলু) : ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য— তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সূরা বাকারা : ৬১)

> ডাল (আল-আদাসু) : ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য— তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সূরা বাকারা : ৬১)

> পেঁয়াজ (আল-বাসালু) : ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য— তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সূরা বাকারা : ৬১)

> শস্যদানা বা বীজ (আল-হাব্বু) : ‘নিশ্চয় আল্লাহ বীজ ও আঁটিকে অঙ্কুরিত করেন।’ (সূরা আনআম : ৯৫)

> শীষ বা মুকুল (আস-সানাবিলু) : ‘যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের দৃষ্টান্ত হলো বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শিষ বের হয় এবং প্রত্যেক শিষে থাকে ১০০ বীজ।’ (সূরা বাকারা : ২৬১)

> উদ্ভিদ (আন-নাবাতু) : ‘যেন আমি তা (পানি) দিয়ে উৎপন্ন করি শস্যদানা ও উদ্ভিদ।’ (সূরা নাবা : ১৫)

> পুদিনা জাতীয় এক ধরনের গুল্ম বা যেকোনো সুগন্ধি গুল্ম (আর-রায়হানু): ‘আরও আছে খোসাবিশিষ্ট শস্য ও সুগন্ধি ফুল।’ (সূরা রহমান : ১২)

> আদা বা এক ধরনের মূল্যবান সুগন্ধি (আজ-জানজাবিলু): ‘তারা সেখানে এমন শূরা পান করবে, যাতে মেশানো থাকবে জানজাবিল’। (সূরা দাহর : ১৭)

> শাকসবজি (আল-কাদবু) ‘আমি তাতে উৎপন্ন করি শস্য, আঙুর, শাকসবজি…।’ (সূরা আবাসা: ২৪-৩২)

> কর্পূর (আল-কাফুরু) : ‘নিশ্চয় সৎ মানুষ জান্নাতে এমন পাত্রে পান করবে, যাতে মেশানো থাকবে কর্পূর।’ (সূরা দাহর : ৫)

> কাঁটাযুক্ত গাছ বা ক্যাকটাস (আজ-জাক্কুম) : ‘আপ্যায়নের (জাহান্নামিদের) জন্য এটাই না উত্তম কাঁটাযুক্ত গাছ?’ (সূরা সাফফাত : ৬২)

> ঘাস বা এমন গাছ, যার ডাল হয় না (আন নাজমু): ‘লতাপাতা ও বৃক্ষরাজি তাকে সিজদা করে।’ (সূরা রহমান : ৬)।

> ডালবিশিষ্ট গাছ (আস-সাজারু) : ‘লতাপাতা ও বৃক্ষরাজি তাকে সিজদা করে।’ (সূরা রহমান : ৬)

> খেঁজুরের কাঁদি (আল-কিনওয়ানু) : ‘এবং খেজুর গাছ, যার শীর্ষদেশ কাঁদির ভারে নুয়ে থাকে।’ (সূরা আনআম : ৯৯)

> খেঁজুর গাছের শিষ (আত-তালউ) : ‘এবং খেজুর গাছ, যার শীর্ষদেশ কাঁদির ভারে নুয়ে থাকে।’ (সূরা আনআম : ৯৯)

নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ