ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

নুসরাতের ভিডিও: ওসি মোয়াজ্জেমের ৮ বছর জেল, ১০ লাখ জরিমানা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ২৯ নভেম্বর ২০১৯  

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

থানায় ওসির সামনে দেওয়া প্রতিবাদী মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহানের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ৮ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডতি করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।  

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন এই রায় দেন।

রায় ঘোষণার আগে অভিযুক্ত সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে কারাগার থেকে ঢাকার আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়।  এরপর বেলা ২টার পর তাকে এজলাসে তোলা হয়।

রায় ঘোষণাকালে জরিমানার টাকা প্রসঙ্গে আদালত বলেন, সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে এই টাকা ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের পরিবারকে দিতে হবে।

দেশের ইতিহাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের মামলার প্রথম এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইদুল হক বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।  ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম যে অপরাধ করেছিলেন, সেটি আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

অন্যদিকে, দণ্ডিত মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দাবি করেছেন, তার মক্কেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তারা।  ২০ নভেম্বর এই মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হলে আদালত রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) তারিখ ধার্য করেন।

গত ১৭ জুলাই সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সেদিন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি নির্দোষ।  ফেনীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন আইনজীবী সুমন। সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তা আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেন। এর ২০ দিনের মাথায় গত ১৬ জুন মোয়াজ্জেমকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

নুসরাত জাহান রাফিকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেতেৎকালীন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার অনুসারী একই মাদরাসার কিছু শিক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গীরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃতু্য হয়। এর ১০ দিন আগে নুসরাত মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যায়। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম নুসরাতকে তখন আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তার বক্তব্য ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে।

ফেনীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় গত ২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা সহ ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড

আরও পড়ুন
আইন আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত