ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

ধৈর্য্যের চারা রোপণ করুন...

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৪, ২৪ নভেম্বর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

 

মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলের সঙ্গেই রয়েছেন তবে যারা ধৈর্যশীল তাদের সঙ্গে আল্লাহর রয়েছে এক নিবিড় সখ্যতা।

ধৈর্যের ফলাফল কত মিষ্ট হতে পারে তার পরিমাপ করা সম্ভব নয়। মহান রাব্বুর আলামীন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারীমে বলেন,

قُلْ يَا عِبَادِ الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا رَبَّكُمْ لِلَّذِينَ أَحْسَنُوا فِي هَذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةٌ وَأَرْضُ اللَّهِ وَاسِعَةٌ إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُم بِغَيْرِ حِسَابٍ

‘বলুন, হে আমার বিশ্বাসী বান্দাগণ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর। যারা এ দুনিয়াতে সৎকাজ করে, তাদের জন্যে রয়েছে পুণ্য। আল্লাহর পৃথিবী প্রশস্ত। যারা সবরকারী, তারাই তাদের পুরস্কার পায় অগণিত।’ (সূরা: যুমার, আয়াত: ১০)

মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে আরও বলেন,

وَأَطِيعُواْ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَلاَ تَنَازَعُواْ فَتَفْشَلُواْ وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُواْ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

‘আর আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রাসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সঙ্গে। (সূরা: আনফাল, আয়াত:৪৬)’

সত্য বলতে কি মানুষের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করা যতটা সহজ ধৈর্য্য ধারণ করা ততটাই কঠিন। তবে যদি আমরা প্রথম কয়েকটি কঠিন ধাপ পেরিয়ে যেতে পারি তবে অবশ্যই তা আমাদের জন্য সহজতর হয়ে যাবে।

আর যে সবর অবলম্বন করে আল্লাহ তাকে রহমতের চাদরে আবৃত করেন, এবং যে তার যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে আল্লাহ তাকে স্ব-নির্ভর করে দেন। ধৈর্য্যের চেয়ে মহামূল্যবান কোনো পুরস্কার নেই। (বুখারী)

> সহানুভূতির শিক্ষা:

যখন কেউ আমাদের আঘাত করে এবং আমরা নিজেদের দিকে তাকাই, দেখতে পাই আমাদের অন্তরগুলো ব্যথাতুর হয়ে উঠে, আমরা রাগান্বিত হই। এই অবস্থাটা আমাদের জন্য সর্বাপেক্ষা কঠিন ও সহানুভূতি শিক্ষার অন্যতম উপায়।

এভাবেই আমরা নিজের মাধ্যমে অন্যকে বুঝতে পারি। আমাদের অন্তরগুলো যখন বেদনাহত, আমরা তখন অনুভব করি একই অবস্থানে অন্যের অবস্থা কি হতে পারে।

হতে পারে সময়ের চাকা আপনার দিকেও ঘুরতে পারে কিংবা এমনও হতে পারে আপনি নিজের অজান্তেই মানুষকে এমনভাবেই কষ্ট দিয়েছেন।

অন্যের কষ্টগুলো অনুভবের চেষ্টা করুন, তারাও যখন আপনার দ্বারা কখনো আঘাত পেয়েছিল ঠিক এমনি ছিল তাদের অনুভুতিগুলো। যদি এভাবে ভাবতে পারেন তবে নতুন এক শিক্ষা লাভ করতে পারবেন যা পরবর্তিতে আপনার ব্যথাতুর হৃদয়কে শান্ত করতে কাজে দিবে।

> আল্লাহতেই পূর্ণতা অন্বেষণ করুন:

আল্লাহ ছাড়া আর কেউ পরিপূর্ণ নন। প্রতিটি মানুষেরই যেমন কিছু ভালো দিক রয়েছে ঠিক রয়েছে তেমন খারাপ দিক। অনেক সময় দেখবেন মানুষ আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে, যখন অসৎ ব্যক্তিবর্গ পরস্পর মিলিত হয় এ সমস্যা হতে বাধ্য।

যিনি সর্বদাই আপনার পাশে থাকেন, আপনাকে সর্বাপেক্ষা বুঝতে পারেন এবং আপনার মঙ্গল কামনা করেন তিনি একমাত্র আল্লাহ। আঘাত পেলেই বুঝতে পারা যায় মানুষ কতটুকু ত্রুটিপূর্ণ এবং আল্লাহ কত মহান এবং পরিপূর্ণ এক সত্তা, এতে আরও বুঝা যায় কাকে ভালোবেসে তার ওপর নির্ভরশীল হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

> ধৈর্য্যের সর্বোচ্চ স্তর পরিতৃপ্তির শিক্ষা নিন:

যখন আপনি আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণরূপে নির্ভরশীল হবেন। অবশ্যই তখন তিনি আপনার প্রতি রহমত বর্ষণ করবেন এবং আপনার জন্য যা উত্তম তাই তিনি নির্ধারণ করবেন। 

এমন পরিস্থিতিতে আপনি শুধুমাত্র একজন ধৈর্য্যশীল হবেন না বরং শান্তিতেও থাকবেন। কোনো গ্লানি আপনার সুখ কেড়ে নিতে পারবে না। আগে যে কারণে আপনি কষ্ট পেতেন সেই দুঃখগুলোই আজ আপনার আনন্দে রূপান্তরিত হয়েছে। এ হচ্ছে ঈমানের এক উচ্চতম স্তর, তবে তা অর্জন করা অসম্ভব নয়।

> আল্লাহর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলুন:

যখন আপনি কষ্টে থাকেন এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন তখন সত্যিই দোয়াগুলো হৃদয়ের গভীর থেকে আসে। যদি আমরা নিয়মিত দোয়া করে যাই তবে অচিরেই আমরা সুন্দর অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারব। আমরা অনুভব করতে পারব আমাদের হৃদয়ের ব্যথার ওপর ভিত্তি করেই আল্লাহর সঙ্গে আমাদের এক গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠছে যা আমরা আর কখনো হারাতে চাইনা, এবং চাইনা আল্লাহর সঙ্গে গড়ে উঠা সম্পর্কের ইতি ঘটুক।

মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা আপনার, আমার সহায় হোন। আল্লাহুম্মা আমিন।

নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ