ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

জিনে ধরা সৌদি আরবের দুর্দশা!

তামীম রায়হান

প্রকাশিত: ১৫:৫২, ৩ নভেম্বর ২০১৮  


আমার বেশ কয়েকজন শিক্ষক আলজাজিরায় কর্মরত, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালে বেশ কয়েকবার আলজাজিরার ভেতরে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছি, মদিনা খলিফা এলাকায় আলজাজিরার প্রধান কার্যালয়ের বিপরীতে বাসা ভাড়া নিয়ে থেকেছি প্রায় দু'বছর- এসব কারণে আলজাজিরার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা সবার চেয়ে একটু আলাদা। আজ আলজাজিরা পা দিচ্ছে ২৩ বছরে। ফলে এটি আমার জন্যও বিশেষ আনন্দের। 

জিনের আছরে উন্মাদ রোগীকে যখন কবিরাজ ঝাড়ফুঁক করতে শুরু করেন, তখন একপর্যায়ে সেই রোগী উঠে সোজা হয়ে বসে, তারপর কথা বলতে শুরু করে। এমন দৃশ্য গ্রামেগঞ্জে আমরা অনেকেই দেখেছি। ‘স্বৈরশাসকদের জিনে ধরা’ আজকের আরবদুনিয়ায় আলজাজিরার উদাহরণ ঠিক তেমন কবিরাজের মতো। 

আলজাজিরা যখন দায়িত্ব নেয় মন্ত্রপাঠের, তখন অর্ধমৃত রোগীর শরীরে প্রাণশক্তি আসবে, হরহর করে সে কথা বলবেই। এর সর্বশেষ নমুনা জামাল খাশোকজি হত্যাকাণ্ডে সৌদিআরবের চলমান দুর্দশা। গত ০২ অক্টোবর থেকে আলজাজিরা জামালকে নিয়ে সত্যমন্ত্র পাঠ শুরু করেছিল সবার আগে। 

সৌদি প্রিন্স সালমান ও তার জিঘাংসার শিকার সাংবাদিক খাশোগি

এরপর আজ এক মাসের মাথায় জিনে ধরা সৌদিআরবের দুর্দশা কারও অজানা নয়। প্রথমে চুপচাপ, তারপর অস্বীকার, এরপর হাতাহাতিতে মৃত্যুর কথা স্বীকার, অব্যাহত চাপের মুখে এরপর অপরিকল্পিত খুন বলে দায় স্বীকার, এরও পরে ভেবেচিন্তে খুন এবং মারাত্মক ভুলের স্বীকারোক্তি। 

ধাপে ধাপে সৌদিআরবের এই সোজা হয়ে আসার পেছনে কবিরাজের ভূমিকায় কঠিন ছিল আলজাজিরা। আলজাজিরার সংবাদ পাঠক-পাঠিকারা শুধুমাত্র সেজেগুজে স্টুডিওতে এসে পুতুলের মতো খবর পড়ে শোনান না, বরং বের করে আনেন খবরের নাড়িভুঁড়িও। আর তাই যাত্রা শুরুর পর দু’দশকের বেশি সময় পেরিয়ে আজ অবধি আরব জনপদের আমজনতার কথার অপর নাম আলজাজিরা। 

আরব অঞ্চলের দুষ্ট-পাজিরা এভাবে প্রতিনিয়ত ধরাশায়ী হবে আলজাজিরার হাতে, এই প্রত্যাশা পুষে রাখি হৃদয়ের গভীরে। 

আলজাজিরার ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত রাত (০১ নভেম্বর) ১২টায় কাতারে আলজাজিরার প্রধান কার্যালয়ের আলোময় একটি ছবি এখানে দিলাম লেখার সঙ্গে।

তামীম রায়হান: প্রবাসী তরুণ সাংবাদিক, গণমাধ্যম গবেষক, মানবাধিকার বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কাতার

নিউজওয়ান২৪/এমএম