ঢাকা, ২৮ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

জন্মদানের কষ্ট!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ২১ অক্টোবর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

কোনো নারী কি কখনো ভাবতে পারবেন ১০ কেজি ওজনের একটি বাচ্চা জন্মদানের কথা? যা কি-না সাধারণ মানব শিশুর ওজনের থেকে প্রায় তিন গুণ! কি দুর্বিষহ হবে সেই অভিজ্ঞতা, তাই না? কিন্তু কিউই পাখির মায়েদের কাছে এটাই স্বাভাবিক। এ পাখিদের ডিমের ওজন এদের শরীরের মোট ওজনের প্রায় ২০ শতাংশ! কিন্তু প্রাণী জগতের দিকে আরো গভীরভাবে তাকালে কিউইদেরকে সৌভাগ্যবানই মনে হবে। খটকা লাগছে? জেনে নিন বিস্তারিত-

শিঙ্গলব্যাক গিরগিটি মায়েরাও জন্মদানের সময় খুব কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। এই সরীসৃপ প্রজাতি একবারে এক থেকে দুইটি বাচ্চার জন্ম দেয়, খুব বেশি কষ্টদায়ক তো মনে হচ্ছে না, তাই না? তবে জানুন, এই প্রজাতির গিরগিটির নবজাতকদের ওজন মায়ের ওজনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ! মানুষের সঙ্গে তুলনা করলে দাঁড়ায়, যেন একজন মা সাত বছরের একটি বাচ্চাকে জন্ম দিচ্ছেন! কিন্তু সন্তান জন্মদান কঠিন হওয়ার জন্য বাচ্চাকে সব সময় ভারীই হতে হবে এমন ঠিক নয়।

1.জন্মদানের কষ্ট!

সজারুর কথাই ধরা যাক! এদের দেহে সুতীক্ষ্ম সব কাঁটা থাকে শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। কিন্তু এই সজারু যখন বাচ্চা দেয়, তখন? এমনিতে বাচ্চা সজারুর কাঁটা নরম থাকে যা বাতাসের সংস্পর্শে এসে শক্ত হয়। তবে যদি কোনো বাচ্চা সজারু ঠিক পথে, অর্থাৎ মাথা প্রথমে ভূমিষ্ঠ না হয়ে, পা থেকে শুরু হয় তবে ঘটে ভয়ানক বিপত্তি। মা সজারুর যোনিপথ সন্তানের কাঁটা বিঁধে ক্ষতবিক্ষত হয়।

2.জন্মদানের কষ্ট!

যোনিপথের কথা বলতে গেলে আসবে স্পটেড বা কালো বিন্দুযুক্ত হায়নাদের কথা। মা হায়নাদের যোনিপথ হয় খুবই সূক্ষ্ম ও ক্ষুদ্র। আর এই যোনিপথ দিয়ে সন্তান জন্মদান শুধু যে প্রচন্ড কষ্টদায়ক তাই নয়, অনেক সময় মৃত্যুরও কারণ। পরিসংখ্যান দিয়ে বলতে গেলে মা হায়নাদের প্রায় ১৫ শতাংশ প্রথমবার মা হওয়ার সময় মৃত্যুবরণ করে! কিন্তু বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এক প্রজাতির ভেলভেট মাকড়সার ক্ষেত্রে এ সমস্যাটি আরো ভয়াবহ। এরা পরিচিত স্টিগোডাইফাস লিনিটাস নামে।

3.জন্মদানের কষ্ট!

কিছু কিছু প্রাণী তাদের বাচ্চাদের জন্য খাবার চিবিয়ে দেয়। এই মাকড়সারা ব্যাপারটিকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছে। যখনই সে একটি ডিমের থলি জন্ম দেয়, তার শরীরের টিস্যুগুলো আস্তে আস্তে ক্ষয় হতে থাকে। যখনই ডিমের থলি ফুটে বাচ্চা বের হয় মা তার নিজের দেহ থেকে নির্গত তরল পদার্থ বাচ্চাদের খেতে দিয়ে আস্তে আস্তে নিজে নিঃশেষ হতে থাকে। এক সপ্তাহ বাদে বাচ্চারা যখন একটু সক্ষম হয় তখন তারা নিজেরাই সবাই মিলে মায়ের অবশেষটুকুও খেয়ে যে যার পথে চলে যায়। মায়ের স্মৃতি হিসেবে পড়ে থাকে শুধু একটি খোলস।

জন্মদান মায়েদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ভয়াবহ বা অসস্তির ব্যাপারই নয়, অনেকের ক্ষেত্রে জীবন হন্তারকও। মা হওয়া তো সহজ কিছু নয়!

নিউজওয়ান২৪/জেডএস