ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

‘খালেদার স্কুটি সঙ্গী’র দুঃখ ও নেত্রীর মুক্ততে নতুন কৌশল!

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ২২ আগস্ট ২০১৯  

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী ও স্কুটিতে ডালিয়া রহমান (ছবি: সংগৃহীত)

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী ও স্কুটিতে ডালিয়া রহমান (ছবি: সংগৃহীত)

কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার মেয়ে ডালিয়া রহমান। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু দিন পড়াশোনা করে চলে আসেন ঢাকায়। রাজধানীতে এসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছাকাছি আসার সুযোগ পান।

বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে ‘খালেদার স্কুটি সঙ্গী’ হিসেবে পরিচিত মুখ ডালিয়া। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা বরুড়া উপজলা যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত খলিলুর রহমান ভুইয়া।

খালেদা জিয়া যতবার আদালতের উদ্দেশে গুলশানের বাসা থেকে রওনা দিয়েছেন; প্রায় প্রতিবারই সঙ্গী ছিলেন ডালিয়া। খালেদা জিয়ার গাড়ির সামনে স্কুটি নিয়ে যুক্ত ছিলেন একমাত্র এই নারী বাইকার। জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসনও তাকে পছন্দ করতেন।

বেশ কয়েকটি পৃথক ছবিতে দেখা গেছে, ডালিয়া চোখে সানগ্লাস, গায়ে শার্ট/টি-শার্ট ও জিন্সপ্যান্ট পরে রাজপথে স্কুটি চালাচ্ছেন। বোঝা যাচ্ছে তিনি খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে প্রটোকল দিচ্ছেন। ডালিয়া স্কুটি নিয়ে খালেদার গাড়িবহরে সঙ্গী হয়ে দৃষ্টি কাড়েন দলের নেতাকর্মীদের।

সেই ডালিয়া এবার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হতে চান। ছাত্রদলের কাউন্সিল ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন। ডালিয়া মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন ছাত্রদলের ইতিহাসে প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক।

ডালিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক প্রোফাইল থেকে জানা গেছে, তিনি ছাত্রদলের সবশেষ কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সহসম্পাদক ছিলেন। দায়িত্ব পালন করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও। তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি ও এলএলএম সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের আওতায় এলএলবি অনার্স করছেন।

এ ব্যাপারে ডালিয়া রহমান বলেন, নেত্রী (খালেদা) যতবার আদালতের পথে বের হয়েছেন, ততবার আমি সঙ্গে ছিলাম। তবে আমার দুঃখ; কারাগারে তার সঙ্গী হতে পারিনি। এ বেদনা আমাকে প্রতি দিনই পীড়িত করে। আমি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যই ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হতে চাই। পুরো দেশের ছাত্র সমাজকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করতে চাই, নেত্রীকে মুক্ত করতে চাই।

দীর্ঘ ২৭ বছর পর কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্বাচিত নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা নেওয়ার পর্ব শেষ হয়েছে।

আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। এ দিন সংগঠনটির শীর্ষ দুই পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটগ্রহণ হবে। দেশের ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলরা ভোট দেবেন।

জানা গেছে, শীর্ষ দুই পদের জন্য ৭৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ২৭ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৪৯ জন। এই দুই পদে ১০৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন।

মঙ্গলবার  মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা দেয়ার দ্বিতীয় ও শেষ দিনে প্রার্থীরা নিজেদের অনুসারী আর সমর্থকদের নিয়ে শোডাউন করে মনোনয়ন ফরম জমা দেন।

সাবেক ছাত্রনেতারা কাউন্সিল তদারক করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পদ প্রত্যাশীরা। তারা এবার নির্বাচিত নেতৃত্বের মাধ্যমে বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত ছাত্রদলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী।

সভাপতি পদপ্রার্থী যারা- আসাদুল আলম টিটু, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আল মেহেদি তালুকদার, মামুন খান, হাফিজুর রহমান, সাজিদ হাসান বাবু, আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, আজিম উদ্দিন মেরাজ, মো. ইলিয়াস, মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, তানভীর রেজা রুবেল, এবিএম মাহমুদ আলম, এম আরজ আলী শান্ত, সুরুজ মণ্ডল, আবদুল মাজেদ, মাইনুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, এরশাদ খান, মুহাম্মদ ফজলুল হক নিরব, আরাফাত বিল্লাহ খান, এসএম আল আমিন, জুয়েল মৃধা, আবদুল হান্নান, শামীম হোসেন, এসএএম আমিরুল ইসলাম, সুলায়মান হোসাইন ও আল আমিন কাউছার।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী যারা- এই পদে ৪৯ জন ছাত্রনেতা মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- সাইফ মাহমুদ জুয়েল হাওলাদার, আমিনুর রহমান, মো. হাসান (তানজিল হাসান), ইকবাল হাসান শ্যামল, শেখ আবু তাহের, জোবায়ের আল মাহমুদ রিজভী, কারীমুল হাই নাঈম, রিয়াজ মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, আবদুল মান্নান, নাদিয়া পাঠান পাপন, এবিএম বাকির জুয়েল, মিজানুর রহমান শরীফ, ওমর ফারুক, আলাউদ্দিন খান, রাশেদ ইকবাল খান, ইমদাদুল হক মজুমদার, নাইম হাসান, কেএম সাখাওয়াত হোসেন, শাহনেওয়াজ, এএএম ইয়াহইয়া, ডালিয়া রহমান, সোহেল রানা, মহিনউদ্দীন রাজু, আরিফুল হক, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মোস্তাফিজুর রহমান, আসাদুজ্জামান রিংকু, আবুল বাশার, মিজানুর রহমান সজীব, জুলহাস উদ্দিন, মিজানুর রহমান, জাকিরুল ইসলাম জাকির, সাদিকুর রহমান সাদিক, আবদুল মোমেন মিয়া, কাজী মাজহারুল ইসলাম, আজিজুল হক সোহেল, শেখ মো. মশিউর, জামিল হোসেন, তবিবুর রহমান সাগর, মাজেদুল ইসলাম, মাহমুদুল আলম শাহিন, নাজমুল হক হাবীব, জহিরুল ইসলাম (দিপু পাটোয়ারি), আনিসুর রহমান সুমন, এমএম বাবুল আক্তার শান্ত ও মুন্সি আনিসুর রহমান।

ছাত্রদলের সাবেক দফতরর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি ছাত্রদলের মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, সর্বমোট ৭৬টি ফরম জমা পড়েছে। ২২ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ দিন জমাকৃত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবে ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে বাছাই কমিটি। 

প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৩১ আগস্ট। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রচারণা ৩ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত।

নিউজওয়ান২৪.কম/আ.রাফি

আরও পড়ুন