ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

শুভ হিজরি নববর্ষ ১৪৪২

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১২, ২১ আগস্ট ২০২০  

হিজরি বছরের প্রথশ মাস মহররম ও শেষ মাস জিলহজ অনেক ফজিলত ও মর্যাদার মাস।

হিজরি বছরের প্রথশ মাস মহররম ও শেষ মাস জিলহজ অনেক ফজিলত ও মর্যাদার মাস।


হিজরি সন ১৪৪১ বিদায়ে মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সব মুসলমানের জন্য রহমত বরকত ও নাজাতের বারতা নিয়ে পথচলা শুরু করেছে ১৪৪২ হিজরি বর্ষ। 

বাংলাদেশসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে হিজরি নববর্ষের প্রথম দিনে নিউজওয়ান২৪.কমের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক মুবারকবাদ ও শুভ হিজরি নববর্ষ ১৪৪২।

আমাদের প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরতের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই হিজরি সনের শুভ সূচনা হয়। আজ ১৪৪২ হিজরি বর্ষের প্রথম দিন। হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররম। ১৪৪১ হিজরি বর্ষের পর ১৪৪২ হিজরি বর্ষের পথচলা শুরু হলো।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন তথা কর্মসূচি পালিত হয়ে থাকে। আরবি নববর্ষের অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্য থাকা সত্ত্বেও উল্লেখ করার মতো কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না বললেই চলে।

হিজরি বছরের প্রথশ মাস মহররম ও শেষ মাস জিলহজ অনেক ফজিলত ও মর্যাদার মাস। এ ছাড়া আরবি অনেক মাসই মর্যাদা ও গুরুত্বপূর্ণ মাস। তাই হিজরি বর্ষের প্রথম মাসে বিগত বছরের গোনাহ মাফ এবং আগামীর কল্যাণের মর্যাদাপূর্ণ সময়ও হিজরি প্রথম মাস মহররম।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ত্যাগ ও কোরবানির ঐতিহাসিক স্মৃতি স্মারক হিজরি (আরবি) সন। ইসলামের প্রচার, প্রসার এবং বিজয় কেতন উড্ডীনে হিজরি সনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যাধিক। জাহেলিয়াতের জ্ঞানপাপীরা বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলামকে পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

আল্লাহর নির্দেশে বিশ্বনবী দ্বীন প্রচারে রাসূল (সা.) প্রিয় মাতৃভূমি ত্যাগ করে মাদিনায় হিজরত করেন। যাকে কেন্দ্র করেই আজকের হিজরি সন। যা আজো মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে আলোকবর্তিকা হিসেবে জাগরিত হয়ে আছে।

মনে রাখা জরুরি যে, হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম। এ মাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ মাস। মুহাররম মাস শুধুমাত্র কারবালার ঘটনা স্মরণ করার মাস নয়। কারবালে কেন্দ্র করে এ মাস মর্যাদার নয়, বরং এ মাস গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার মাস, ত্যাগের মাস, ভালো কাজ করার মাস, খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার এবং মুসলিম বিশ্বকে নতুন করে গড়ার তোলার দৃঢ় প্রতিজ্ঞার মাস।

ইসলাম ও মুসলমানের জন্য এ মাসের রয়েছে অনেক শিক্ষণীয় ও পালনীয় বিষয়। তাইতো এ মাসের ৯, ১০ অথবা ১০, ১১ তারিখে ২টি রোজা রাখা উত্তম।

আশুরার রোজার ফজিলত: 

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রোজা রাখার জন্য এত অধিক আগ্রহী হতে দেখিনি যত দেখেছি এই আশুরার দিন এবং রমজান মাসের রোজার প্রতি। (বুখারি)।

আশুরার রোজা রাখার নিয়ম: 

ইসলামের দৃষ্টিতে আশূরা উপলক্ষে দু’টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। অর্থাৎ ৯, ১০ অথবা ১০, ১১ তারিখ। শুধু ১০ তারিখ রোজা রাখা মাকরূহ। এ সম্পর্কে আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা রাখলেন এবং (অন্যদেরকে) রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটি তো এমন দিন, যাকে ইহুদি ও খ্রিস্টানরা বড় জ্ঞান করে, সম্মান জানায়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আগামী বছর এদিন আসলে, আমরা নবম দিনও রোজা রাখব ইনশাল্লাহ! বর্ণনাকারী বলছেন, আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয়ে গিয়েছেন।

পরিশেষে...

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর হিজরতের আদর্শে সৃষ্ট হিজরি নববর্ষ বিশ্ব মানবতাকে ইসলামের সুমহান আদর্শ ও ত্যাগের দিকেই আহ্বান করে। হিজরি নববর্ষ ১৪৪২ হয়ে ওঠুক মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণ ও মুক্তির বছর। এবং সেই সঙ্গে বয়ে আনুক করোনামুক্ত পৃথিবীর নতুন এক বার্তা।  আমিন।