ঢাকা, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক নেক আমলগুলো

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২০, ৮ জানুয়ারি ২০১৯  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

একজন মুসলমান দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও বাৎসরিক পর্যায়ে কী কী ইবাদত করবে, তা নিম্নে সংক্ষেপে প্রদত্ত হলো-

দৈনিক পালনীয় নেক আমলগুলোর মধ্যে রয়েছে: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, নামাজের জন্য ওজু করা, ওজু ও নামাজের সময় মিসওয়াক করা, জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা, সুন্নত নামাজগুলো আদায় করা (ইশরাকের নামাজ, তাহাজ্জুদের নামাজ, বিতিরের নামাজ) 

সকাল-সন্ধ্যার যিকির-আযকার, দিবানিশির যিকির-আযকার (ঘরে প্রবেশের দোয়া, ঘর থেকে বের হওয়ার দোয়া, মসজিদে প্রবেশ ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া, টয়লেটে প্রবেশ ও টয়লেট থেকে বের হওয়ার দোয়া, পানাহারের দোয়া, ফরজ নামাজের শেষে পঠিতব্য দোয়া...), ইমামের সঙ্গে আজানের শব্দাবলি উচ্চারণ।

সাপ্তাহিক নেক আমলগুলোর মধ্যে রয়েছে: জুমার নামাজ আদায়, এদিনে বা রাতে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা, জুমাবার দিনে বা রাতে বেশি বেশি দুরুদ শরীফ পড়া, সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখা।

মাসিক নেক আমলের মধ্যে রয়েছে: প্রত্যেক মাসের তিনদিন রোজা রাখা (উত্তম হচ্ছে- বীযর দিনগুলোতে তথা চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখা)।

বাৎসরিক বা মৌসুমি নেক আমলগুলোর মধ্যে রয়েছে: রমজানের রোজা রাখা, মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে তারাবীর নামাজ আদায় করা, দুই ঈদের নামাজ আদায় করা, সামর্থ্য থাকলে হজ আদায় করা, সামর্থ্যবান হলে জাকাত আদায় করা, রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করা, শাওয়ালের ছয় রোজা রাখা, আশুরার রোজা রাখা এবং সঙ্গে একদিন আগে বা পরে আরো একটি রোজা রাখা, আরাফার দিন রোজা রাখা এবং যিলহজের প্রথম দশদিন বেশি বেশি নেক আমল করা।

এছাড়াও কিছু আমল আছে যেগুলো বিশেষ কোনো সময়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়; যেকোনো সময় সে আমলগুলো করা যায়। এগুলোর মধ্যে কিছু আমল অন্তরের আমল; আর কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল। 

যেমন- মাকরুহ ওয়াক্ত ছাড়া অন্য যেকোনো সময়ে নফল নামাজ আদায় করা, নফল রোজা রাখা, নফল উমরা আদায় করা, আল্লাহ্‌র যিকির করা, কোরআন তেলাওয়াত করা, দরুদ পড়া, দোয়া করা, ইস্তিগফার করা, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা, দান-সদকা করা, মুসলমানদের মাঝে সালামের প্রচলন করা, সচ্চরিত্র হওয়া, জিহ্বাকে পবিত্র রাখা, আল্লাহকে ভালোবাসা, তাঁকে ভয় করা, তাঁর কাছে আশা করা, তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল করা, তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, তাঁর প্রতি একীন রাখা এবং তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া।

এছাড়াও এমন কিছু আমল আছে যেগুলো বিশেষ কোনো প্রেক্ষাপট কেন্দ্রিক; প্রেক্ষাপট পাওয়া গেলে সেসব আমল পালন করা শরিয়তসম্মত। 

যেমন- রোগী দেখতে যাওয়া, জানাযার নামাজ আদায় করা, হাঁচির উত্তর দেয়া, সালামের উত্তর দেয়া, দাওয়াত দিলে গ্রহণ করা, ইস্তিখারার নামাজ আদায় করা, তওবার নামাজ আদায় করা, সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামাজ আদায় করা, বৃষ্টির নামাজ আদায় করা, বিবদমান দুইপক্ষের মাঝে মীমাংসা করা, দৃষ্টি অবনত রাখা, কষ্টদায়ক জিনিস দূর করা, কষ্ট ও বিপদ-মুসিবতে ধৈর্য ধারণ করা...ইত্যাদি।

সলফে সালেহীন একদিনে চারটি ইবাদত পালন করাকে মুস্তাহাব জ্ঞান করতেন। সেগুলো হচ্ছে- রোজা রাখা, মিসকীন খাওয়ানো (সদকা করা), জানাযার নামাজ আদায় করা ও রোগী দেখতে যাওয়া। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘এগুলো যে ব্যক্তির মাঝে একত্রিত হবে সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।’(সহিহ মুসলিম (১০২৮))

উল্লেখ্য যে, নেক আমল বা ইবাদতের পরিধি অতি বিস্তৃত। এখানে সব ইবাদত উল্লেখ করার সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানার জন্য নিম্নোক্ত গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন করা যেতে পারে-

ইমাম মুনযিরির লিখিত ‘আত-তারগীব ওয়াত তারহীব’ এবং ইমাম নববীর রচিত ‘রিয়াদুস সালেহীন’। বিশেষত রিয়াদুস সালেহীন এর ‘ফাযায়েল অধ্যায়’।

সুত্র: islamqa.info

নিউজওয়ান২৪/এনআর