NewsOne24

কাশ্মীর যাচ্ছেন রাহুল গান্ধী

নিউজ ডেস্ক

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ১১:৩৯ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৯ শনিবার

রাহুল গান্ধী -ছবি: সংগৃহীত

রাহুল গান্ধী -ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। 

চলমান উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) রাজ্যটি পরিদর্শনে যাচ্ছেন দেশটির প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ পার্লামেন্টের অন্তত ১০ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা।

প্রতিনিধি দলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীসহ আরো আছেন দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, কেসি বেণুগোপাল, ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিএম-মার্ক্সবাদী) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, দ্রাভিদা মুনেত্রা কাজাগামের (ডিএমকে) তিরুচি সিবা, ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই) নেতা ডি রাজা, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) মনোজ ঝাঁ, তৃণমূল কংগ্রেসের দীনেশ ত্রিবেদী, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) মজিদ মেনন এবং ধর্ম নিরপেক্ষ জনতা দলের (জেডিএস) কুপেন্দ্র রেড্ডিসহ প্রমুখ।

এর আগে গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।

এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরান।

এমন পরিস্থিতিতে জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন কোনোভাবেই রাজ্যটিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন না। কেননা এর আগেও কংগ্রেস নেতা ও পার্লামেন্টের সদস্য গুলাম নবি আজাদ পর পর দুবার কাশ্মীরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে তাকে দিল্লিতে ফেরত পাঠানো হয়। তাছাড়া সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও সিপিআই সাংসদ ডি রাজাও কাশ্মীর পরিদর্শনে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।

এ দিকে ভূস্বর্গ খ্যাত রাজ্যটির বিশেষ মর্যাদা রদের পর পরই স্থানীয় জনপ্রিয় বিরোধী নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকে বেশ কয়েকদিন গৃহবন্দি রাখার পর গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।

যদিও এসবের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী অভিযোগ করে বলেছিলেন, 'জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের গণতন্ত্র এখন বিপন্ন। কেননা বর্তমানে সেখানকার মানুষ নিপীড়িত। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের স্বার্থে সেই খবর প্রকাশ্যে আসতে দিচ্ছে না।'

মূলত রাহুলের সেই অভিযোগের পরই জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক কাশ্মীর গিয়ে অঞ্চলটির জনগণ ঠিক কেমন অবস্থায় আছেন, তা দেখার জন্য রাহুল গান্ধীর প্রতি আহ্বান জানান। কংগ্রেস নেতার প্রতি কাশ্মীর ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, 'রাহুল গান্ধী যেন এখানে এসে পরিস্থিতি দেখে যান; যে কাশ্মীরবাসীর আদৌ কেমন অবস্থায় আছেন।'

বিশ্লেষকদের মতে, মূলত এসব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আজ কাশ্মীর পরিদর্শনে যাচ্ছেন রাহুল গান্ধী। যদিও এরই মধ্যে রাহুলসহ তার নেতৃত্বাধীন বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর যাত্রা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছে রাজ্য প্রশাসন। 

অপর দিকে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) এক টুইট বার্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানান হয়, 'পাক-ভারত সীমান্তের ওপারের সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কারণে এখনো সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। এমন অবস্থায় বিরোধী দলগুলোর প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের কখনই রাজ্যের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরানোর প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করা উচিত নয়।'

টুইট বার্তায় আরো বলা ছিল, 'আপনারা শ্রীনগরে গিয়ে মানুষকে সমস্যায় ফেলবেন না। কেননা কাশ্মীরের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘিত করা কখনই আপনাদের উচিত নয়। এখন শুধু জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তিরক্ষা এবং সেখানকার জনগণের জীবন বাঁচানোই আমাদের কাছে অগ্রাধিকার পাবে। তাই আপনাদেরকেও বিষয়টা বুঝতে হবে।'

নিউজওয়ান২৪.কম/আ.রাফি