NewsOne24

নারী পুলিশ কনস্টেবলের মমত্ববোধ

নিউজওয়ান স্পেশাল ডেস্ক

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ১২:২৯ এএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার

ভরণ পোষণ দেয় না, শুধু মারপিট করে লোকটা। এমন মাতাল স্বামী ঝগড়ার পর ছয়মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশু সন্তানসহ স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। ভারতের উত্তর প্রদেশের ঘটনা এটা। মথুরা জেলার ঘণ্টাঘর এলাকার বাসিন্দা ওই নারীকে কোলের শিশুসহ অসহায় অবস্থায় দেখে এক নারী পুলিশের মাতৃমন কেঁদে ওঠে। ডিউটিরত অবস্থায় মানবতার ডাকে আরো বড় কর্তব্যের খাতিরে তিনি এগিয়ে আসেন তাদের সাহায্যে। তিনি ওই অবোধ শিশুটি ও তার মা বিনিতার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন। এরপর তাদের বাড়ি পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করেন। 

ভারতের উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় ইটাহ জেলায় গত বুধবারের এ ঘটনা সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসাধন্য হচ্ছেন বর্ষা পাল নামের ওই নারী কনস্টেবল। বিশেষ করে তিনি শিশুটিকে যেভাবে যত্ম করেছেন পরম মমতায় তার ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। 

ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত বুধবার জেলা এসপির অফিসে এক নারী আসেন। পুলিশ কনস্টেবল বর্ষার সঙ্গে ছবিতে যে নারীকে দেখা যাচ্ছে শিশুসন্তানসহ, বিনিতা নামের ওই নারী এসপি অফিসে এসেছিলেন অভিযোগ জানাতে। বিনিতা যখন এসপি অফিসে আসেন তখন তার কাছে কোনো টাকা-পয়সা ছিল না, বাচ্চাটি ছিল ক্ষুধার্ত। তখন সেখানে দায়িত্বরত কনস্টেবল বর্ষা স্বেচ্ছায় তৎপর হন এবং বাচ্চাটির জন্য দুধের ব্যবস্থা করেন তিনি নিজেই। 

ইটাহ পুলিশের মিডিয়া ইনচার্জ অতুল রাঠোর জানান, ওই নারীর স্বামী বাচ্চার দুধের বদলে মদ কিনে এনেছিল। এ নিয়ে দুজনের ঝগড়া হয় খুব।

বর্ষা জানান, বিনিতা দুধের বোতলে পানি ভরে তার ক্ষুধার্ত সন্তানকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। বিষয়টি নজরে আসতে এর কারণ জানতে চাইলে বিনিতা জানান, তার কাছে বাচ্চার দুধ কেনার টাকা নেই। এ নিয়ে স্বামী বিনোদের সঙ্গে ঝগড়া হলে তাকে বাচ্চাসহ রাস্তায় ফেলে উধাও হয় সে। তিনি আরো জানান, স্বামী বাচ্চাসহ তাকে ইটাহতে তার খালার বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে এনেছিল। কিন্তু পথে বাচ্চার দুধ কেনা নিয়ে ঝগড়ার পর তাদেরকে রাস্তায় ফেলে চলে যায় সে।  

বর্ষা পাল এসপি অফিসের কমপ্লেইন সেল-এ কাজ করেন। তিনি ওই মা ও সন্তানের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে তাদেরকে বাড়ি পৌঁছানোরও ব্যবস্থা করেন। সঙ্গে কিছু টাকা এবং নিজের সেলফোন নম্বর দিয়ে দেন। তিনি বিনিতাকে বলেন, বাড়ি পৌঁছে যাতে তাকে ফোনে জানায় বিনিতা। আর অন্য কোনো সমস্যা হলেও যেন তাকে অসঙ্কোচে ফোন করে। 

ইউপি পুলিশ বর্ষার এই ঘটনা ছবিসহ নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছে। তবে বিনিতার অভাব মোচনের জন্য কনস্টেবল বর্ষা ছাড়া আর কেউ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা যায়নি।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে