সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ মারা গেছেন
স্টাফ রিপোর্টার
নিউজওয়ান২৪
প্রকাশিত : ১০:৫৯ এএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার

মাহফুজউল্লাহ -ফাইল ফটো
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক মাহফুজউল্লাহ মারা গেছেন। আজ (শনিবার) সকাল ১০টার দিকে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এবার তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন বড় মেয়ে ডা. নুসরাত হুমায়রা। মৃত্যুকালে মাহফুজউল্লাহর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানগুলোতে (টক শো) নিয়মিত দেখা যেত তাকে বিএনপিপন্থী বক্তা হিসেবে।
গত ২ এপ্রিল সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ ধানমণ্ডির গ্রিন রোডে নিজের বাসায় হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তির পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তিনি আজ।
তিনি হৃদরোগ, কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রসঙ্গত, সপ্তাহখোনেক আগে ছড়িয়ে পড়ে যে মাহফুজউল্লাহ মারা গেছেন যা পরে মিথ্যা হিসেবে প্রমাণ হয়।
প্রসঙ্গত, বিএনপি মতাদর্শের প্রথিতযশা এই সাংবাদিক ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। সাংবাদিকতা ছাড়াও খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। সর্বশেষ ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালিতে জন্ম তার।
এক সপ্তাহ আগে যে কারণে ছড়িয়েছিল মৃত্যুর গুজব
উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল বিকেলে ছড়িয়ে পড়ে যে মাহফুজ উল্লাহ মারা গেছেন। তার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বড় মেয়ে ডা. নুসরাত হুমায়রা মেঘলার সূত্রে জানা যায় তিনি বেঁচে আছেন। থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাহফুজউল্লাহর সঙ্গে থাকা তার মেয়ে নুসরাত হুমায়রা ওইদিন সন্ধ্যায় বলেন, ‘বাবা বেঁচে আছেন। বাবার পাশেই আমি বসে আছি।’
সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি আরো জানান, মিডিয়ার খবর ঠিক না। তিনি ব্যাংককের হাসপাতালে বাবার পাশে আছেন। তবে তার বাবার অবস্থা আগের রাত থেকে খুব খারাপ। ডাক্তাররা দুপুর থেকে ওষুধ দেওয়া বন্ধ করে রেখেছেন।
সম্ভবত সঙ্কটজনক অবস্থায় ‘ওষুধ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার’ সূত্রেই তার মৃত্যুর গুজবটি ছড়িয়েছিল।
তবে শেষপর্যন্ত আজ ২৭ এপ্রিল চিকিৎসকদের সব ধরনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়, তিনি শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনলিপি
ছাত্রজীববনেই মাহফুজউল্লাহ সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েন। একসময়ের বিপুল জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকেই (১৯৭২ সাল) জড়িত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন।
মাহফুজউল্লাহ চীনে বিশেষজ্ঞ হিসেবে এবং ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসে চাকরি করেছেন।
তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন। আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন। দেশের পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতায় তার অবদান রয়েছে।
বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা মাহফুজউল্লাহর বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। আর তার সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- প্রেসিডেন্ট জিয়া অব বাংলাদেশ: আ পলিটিক্যাল বায়োগ্রাফি, যাদুর লাউ, যে কথা বলতে চাই, অভ্যুত্থানের ঊনসত্তর, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন: গৌরবের দিনলিপি (১৯৫২-৭১), উলফা অ্যান্ড দ্য ইনসারজেন্সি ইন আসাম, বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইফ হার স্টোরি, স্বাধীনতার প্রথম দশকে বাংলাদেশ।
নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে