NewsOne24

একজন প্রতারকের ‘স্যালেন্ডার’ হওয়ার ঘটনা...

স্টাফ রিপোর্টার

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ০২:১৮ এএম, ৮ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

প্রতীকি চিত্র

প্রতীকি চিত্র

এ যেন কাকের ময়ূর হতে চাওয়া। নাম তার জুয়েল, মানে জুয়েল রানা। টাঙ্গাইলের সদর থানার বিশাদ বেটকা মুন্সীপাড়ার আব্দুর রউফের ছেলে। তবে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার পরীক্ষা না দিয়েও রবিবার তিনি রীতিমতো ম্যাজিস্ট্রেট বনে গিয়েছিলেন। অন্তত বনতে চেষ্টা করেছিলেন বেসরকারি নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে স্নাতক করা জুয়েল। 

তবে তার ‘কাকত্ব’ খুব সহজেই ধরা পড়ে গেছে ভুল ইংরেজি শব্দ উচ্চারণের কারণে।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) জাহিদুল কবিরের খাস কামরায় এ ঘটনা ঘটে। সিএমএম আদালতের নাজির সাকিলুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বিচারক পরিচয় দিয়ে জুয়েল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের খাস কামরায় গিয়েছিলেন  মামলার তদ্বির করতে। 

সাকিলুর জানান, জুয়েল রানা নিজেকে সহকারী জজ পরিচয় দিয়ে সিএমএম জহিদুল কবিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে চান। হাকিম মহোদয়কে বিষয়টি জানানো হয়। সাক্ষাৎপ্রার্থী একজন ম্যাজিস্ট্রেট শুনে মুখ্য মহানগর হাকিম তাকে খাস কামরায় সাক্ষাৎ দেন। 

সাক্ষাতের সময় জুয়েল নিজেকে ১২তম জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত বলে পরিচয় দেন। একপর্যায়ে তিনি একটি মামলার একজন আসামির জামিনের বিষয়ে কথা বলতে শুরু করেন।

এপর্যায়ে সিএমএম বিব্রত বোধ করতে থাকেন। এসময় কথায় কথায় জুয়েল ইংরেজি ‘সারেন্ডার’(আত্মসমর্পণ) শব্দের স্থলে  ‘স্যালেন্ডার’ ব্যবহার করেন। ‘একজন ম্যাজিস্ট্রেটের’  এমন ভুলে সিএমএম জাহিদুল কবিরের সন্দেহ হয়। তিনি তখন আগন্তুক কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন জানতে চান। জবাবে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলে। 

এরপর তাকে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তার ১২তম জুডিশিয়াল সার্ভিসের পরীক্ষার রোল নম্বর জানতে চাইলে জুয়েল পকেট থেকে একটি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বের করে দেন। যেখানে রোল নম্বর ছিল ৮২০৩। ওই রোল নম্বর যাচাই করে দেখা যায়, ওই রোল নম্বরের পরীক্ষার্থীর নাম আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং তার বাড়ি কক্সবাজারে।

পরে জেরার এক পর্যায়ে জুয়েল স্বীকার করেন, তিনি বেসরকারি নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে স্নাতক করেছেন। কিন্তু বিচারক হওয়ার কোনো ধরনের পরীক্ষা পাস করেননি। 

জুয়েল আরো স্বীকার করেন যে প্রতারণার জন্যই আব্দুল্লাহ আল নোমান নামে একজনের রোল নম্বর ব্যবহার করে সেখানে জালিয়াতি করে নিজের নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা বসিয়ে ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করেছিলেন।

পরে তাকে কোতয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সিএমএম আদালত।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে