NewsOne24

নূর হোসেন লাপাতা

বাড়ি থেকে আটক ৩, গাড়ি জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার

নিউজওয়ান২৪.কম

প্রকাশিত : ০২:১৭ পিএম, ৩ মে ২০১৪ শনিবার

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম অপহরণ ও হত্যার প্রধান আসামি নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক ও একটি মাইক্রোবাস জব্দ করেছে পুলিশ। অভিযানের সময় বাড়িতে ছিলেন না নূর হোসেন।
নজরুল ইসলাম ও তাঁর চার সহযোগী অপহরণের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনসহ এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেছেন, ‘আমরা খোঁজখবর করছি। তদন্ত চলছে।’ আসামি বিদেশে পালিয়ে গেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তেমনটি মনে করি না। তিনি দেশেই আছেন।’

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নজরুল ইসলাম হত্যার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মইনুর রহমান অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরে বেলা পৌনে একটার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশ নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন নিহত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারের মুঠোফোন ব্যবহার করেছেন।

আটক ব্যক্তিদের পরিচয় কী বা কোথা থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে আমরা কিছু বলছি না। নূর হোসেনের বাড়ি থেকে একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাইক্রোবাসটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) খবর দেওয়া হয়েছে।’

এজাহারভুক্ত আসামিকে কেন গ্রেপ্তার করতে পারলেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজখবর করছি। তদন্ত চলছে।’ আসামি বিদেশে পালিয়ে গেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তেমনটি মনে করি না। তিনি দেশেই আছেন।’
নূর হোসেনের বাড়িতে এত দিন পরে কেন অভিযান চালানো হলো এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই বাড়িতে কয়েকজন গোপনে বৈঠক করছিলেন। এ খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এত দিন অভিযান কেন চালানো হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত দিন আমার কাছে খবর ছিল না। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই।’

গতকাল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে অপহরণের ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেন, তাঁকে অপহরণ করে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় রাখা হয়েছিল—এমন খবরের ভিত্তিতে সেখানে পুলিশ অভিযান চালাতে যায়। পুলিশের অভিযানের খবর পেয়ে অপহরণকারীরা সাইফুল ইসলামকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ফেলে রেখে যায়। তিনি বলেন, সাইফুল ইসলামকে অপহরণের ঘটনায় একজন নারী ও তাঁর স্বামীকে আটক করা হয়েছে।

আজকে দুপুরে শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ উদ্ধারের ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেন, ‘নানা কারণে খুন হয়। আমরা বিষয়টি দেখছি।’

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) গোলাম ফারুক বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে একের পর এক অপহরণ ঘটলেও নারায়ণগঞ্জবাসীকে স্বস্তি দেওয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অপরাধীরা সবাই ধরা পড়বে। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীকে স্বস্তি দিতে চাই।

জেলা আইনজীবী সমিতির সমাবেশ

নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার প্রতিবাদে আগামীকালের ডাকা হরতালের সমর্থনে সমাবেশ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনজীবীরা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সমাবেশে সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা আইনজীবী। আমাদের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল করব। দেশ থেকে সব ধরনের গুম, অপহরণ বন্ধ হোক।’

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ০৩ এপ্রিল, ২০১৪

আরএ/