মসজিদে চিঠি:হিটলার ইহুদিদের যা করেছে ট্রাম্প মুসলিমদের তা করবেন!
বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক
নিউজওয়ান২৪.কম
প্রকাশিত : ১১:৫৮ এএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৬ সোমবার | আপডেট: ০২:১৬ এএম, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬ শনিবার

মুসলিমদের হুমকি ও ট্রাম্পের প্রশংসা করে সিএআইআর-এর ঠিকানায় পাঠানো বিদ্বেষপূর্ণ চিঠি -সিএআইআর-এর ফেসবুক পেইজ থেকে
হিটলার ইহুদিদের সঙ্গে যা করেছিলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মুসলমানদের সঙ্গে তা করবেন- ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যর তিনটি মসজিদে গত সপ্তাহে এই ভয়াবহ হুমকি সম্বলিত চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়েছে কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর)।
চিঠিতে মুসলমানদের ‘পাততাড়ি গুটিয়ে ফাঁকতালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরে পড়ার পরামর্শ’ দিয়ে বলা হয়েছে- এটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
হাতে লেখা চরম বিদ্বেষমূলক ওই চিঠিতে মুসলমানদের ‘শয়তানের সন্তান’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। এই চিঠি ডাকে পাঠানো হয় উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান জোস এবং দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার লংবিচ ও পোমোনায় অবস্থিত সিএআইআর সেন্টারে।
হুমকিপত্রে প্রেরকের নাম-পরিচয় হিসেবে লেখা হয়েছে “আমেরিকান্স ফর অ্যা বেটারওয়ে”। তার নিচে লেখা রয়েছে “লং লিভ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অ্যান্ড গড ব্লেস দ্য ইউএসএ”।
চিঠিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘শহরের নয়া শেরিফ’ (এসআইসি) উল্লেখ করে বলা হয়- তিনি মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করে আমেরিকাকে ফের পরিচ্ছন্ন এবং উজ্জ্বল করে তুলবেন।
চিঠিটি পড়ে দেখা গেছে, চূড়ান্ত বাছবিচারহীন এবং অকথ্য বিদ্বেষপূর্ণ ভাষায় এতে আরও অনেক উস্কানিমূলক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যা সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। মুসলমান নারী-পুরুষদের অবজ্ঞা-অবমান করা বক্তব্য ছাড়া এতে আরও বলা হয়- তোমরা অশুভ, তোমরা উপাসনা কর শয়তানের। তবে তোমাদের হিসাব চুকানোর দিন (কেয়ামত) এসে গেছে।
সিএআইআর জানায়, ডাকবাক্সে প্রথম চিঠিটি পান স্যান জোসে অবস্থিত ইসলামিক সেন্টারের ইমাম।
সানফ্রান্সিসকো ক্রনিকল জানায়, চিঠি পাওয়ার পর প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত ইসলামিক সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক হুস্সাম আইলোউশ এক বিবৃতিতে দাবি করেন, ধর্মীয় হুমকি বিষয়ক আইনের আওতায় এ ঘটনার তদন্ত করতে হবে। এবং ক্রমবর্ধমান মুসলিম বিদ্বেষী ধর্মান্ধ আচরণ যার প্রভাবে এমন ঘটনা ঘটছে- তার বিরুদ্ধে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের নেতাদের এখন মুখ খোলা উচিৎ।
সান জোসের বোর্ড অব দি ইসলামিক সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ফাইসাল ইয়াজাদি বলেন, আশা করছি যিনি পত্রটি পাঠিয়েছেন তিনি মুসলমানদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সচেষ্ট হবেন।
“আমাদের দরজা কখনো রুদ্ধ থাকে না” উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আশা করি পত্রপ্রেরক জানেন আমরা আলোচনায় বসতে পারলে সবচেয়ে সুখী হই। হতে পারে আমরা তার (তিনি নারী বা পুরুষ যেই হোন) কাছ থেকে দুই একটি বিষয় শিখবো এবং তিনিও আমাদের কাছ থেকে কিছু শিখবেন।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে এক বিবৃতিতে এফবিআই জানায়, ২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর (নাইন-ইলেভেন) হামলার পর থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিদ্বেষ তার চরম স্তরে পৌঁছায়। এফবিআইর তথ্যে আরও জানা গেছে, দেশজুড়ে থানা-পুলিশের কাছে গত বছর মুসলিম বিদ্বেষী ২৫৭টি অপরাধের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। ২০১৪ সালের তুলনায় এটা ছিল ৬৭% বেশি। একইসঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ ও ইহুদি বিরোধী অপরাধের ঘটনা বেড়েছে যথাক্রমে ৭.৬% ও ৯% হারে।
নিউজওয়ান২৪.কম/একে