NewsOne24

অাসামে ১২ মুসলমান নিহত

ডেস্ক রিপোর্ট

নিউজওয়ান.২৪.কম

প্রকাশিত : ১২:১৮ পিএম, ৩ মে ২০১৪ শনিবার | আপডেট: ০১:১০ পিএম, ২৯ জুন ২০১৫ সোমবার

ঢাকা: ভারতের অসমের কোকড়াঝাড় ও বাকসা জেলায় বোড়ো উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নারী-শিশুসহ ১২ মুসলমান নিহত হয়েছেন।

 

পুলিশ জানিয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অফ বোড়োল্যান্ডের সন্ত্রাসীরা বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কোকড়াঝাড়ের বালাপাড়া গ্রামে স্থানীয় মুসলিম পরিবার মোহাম্মদ শেখ আলীর বাড়িতে দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। এ সময় শেখ আলী ভয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হলেও তার স্ত্রী-কন্যাকে হত্যা করে জঙ্গিরা।


এর আগে রাত ৮টার দিকে বাকসা জেলার আনন্দবাজারের নরসিংহবাড়ি গ্রামে স্থানীয় সোনা মিঞার বাড়িতে ঢুকে গুলি চালাতে থাকে বোড়ো সন্ত্রাসীরা। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। জঙ্গীদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়েন সোনা মিঞা, তার স্ত্রী রুমিসা খাতুন ও আত্মীয় চম্পা বেওয়া। দুই কন্যা রসিদা খাতুন (১২) ও তসলিমা খাতুন (৩) গুলিবিদ্ধ হলেও তাদের মৃত ভেবে জঙ্গিরা চলে যায়।

 

এরপর রাত ১০টার দিকে জলপাইগুড়ির সীমান্তবর্তী এলাকায় কোশিগাঁওয়ের বলপাড়া গ্রামের দুটি বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত বাসিন্দাদের টেনে হিঁচড়ে বের করে আনে জঙ্গিরা। তাদের এক লাইনে দাঁড় করিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ৫ মহিলা ও দুই শিশু।

 

ওই হামলায় আহত ফরিদ আলী জানান, রাত সাড়ে ১০টার পরে, বিএসএফ জওয়ানরা এলাকায় টহল দিয়ে যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই জঙ্গিরা গ্রামের ৫টি বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে। দু`টি বাড়িতে কোনো লোকজন ছিল না। গুলিতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, ৫ জন মহিলা ও দুই শিশু।

 

কোকড়াঝাড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) সুনীল কুমার জানান, হত্যাকারীদের সন্ধানে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে। বোড়োল্যান্ডে যাতে আবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি না হয়, সে  জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি হয়েছে। বোড়োল্যান্ডের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কেন্দ্রের কাছে অতিরিক্ত ১০ কোম্পানি জওয়ান চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

 

এদিকে, বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে আবসু, আমসু, এবিআমসু-সহ অসমের বিভিন্ন দল ও সংগঠন।  আমসুর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বোড়োল্যান্ড ও সংখ্যালঘুর নিরাপত্তার প্রতি সরকারি উদাসীনতার কারণেই এই ঘটনা ঘটল। ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ`র পদত্যাগ দাবি করেন এবিআমসু`র নেতা লাসিকুল ইসলাম।

 

অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারিও এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবার ও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।

 

২০১২ সালের আগস্টে অসমের কোকড়াঝাড়ে বোড়ো উপজাতি ও বাংলাভাষী মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যকার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় একশ`র বেশি মানুষ নিহত হন -যাদের অধিকাংশই মুসলমান। এছাড়া, মুসলমানদের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ভস্মীভূত হয়।