সংলাপ শেষে যা বললেন ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিউজ ওয়ান২ ৪
প্রকাশিত : ১২:৩৮ এএম, ২ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কিছু কিছু অভিযোগ করেছেন। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদেরও বক্তব্য আছে। এ জন্য এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার গণভবনে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন বলেন, এখানে কিছু কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, সভা-সমাবেশ চলবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। তবে, রাস্তা বন্ধ করে কোনো সভা-সমাবেশ না করে একটা মাঠে হতে পারে।
ঢাকার ব্যাপার তিনি বলেছেন, দরকার হলে আমরা একটি কর্নার করে দেবো। সেটি যারা ব্যবহার করবেন, তাদের কাছে ভাড়া দেয়া হবে। এটা একটা মেনটেইন্সে থাকবে। বিষয়টি নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। তাদের তিন নম্বর পয়েন্ট হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের ছয় নম্বর দফা হলো বিদেশি পর্যবেক্ষক আসবেন এবং নির্বাচন মনিটরিং করবেন। এই ব্যাপারেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই। প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, এ ব্যাপারে আমাদের সাপোর্ট থাকবে। আর ইভিএমের ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ইভিএম একটি আধুনিক পদ্ধতি। তবে, এবার হয়তো নির্বাচন কমিশন সীমিতভাবে ব্যাবহার করবে। এতে আমাদের সমর্থন থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আরেকটা বিষয় হচ্ছে মামলা। তারা রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে একটা প্রশ্ন তুলেছেন। এই ব্যাপারে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাদের মামলার তালিকা, তাদের যে মামলাগুলোকে রাজনৈতিক মামলা, সে তালিকা আমার কাছে পৌঁছে দিতে। এটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, ড. কামাল হোসেনের যে চিঠি, সেই চিঠির উত্তরেও কিন্তু একটা কথা লেখা ছিল—সংবিধানসম্মত সব বিষয়েই আলোচনা হবে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, আজকে পৃথিবীর কোনো দেশেই সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন হয় না। প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদাহরণও দেয়া হয়েছে।
নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব দায়-দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তফসিল ঘোষণার পরপরই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সরকারের অনেক বিষয়, যেগুলো নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত হবে। এসব নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের (ঐক্যফ্রন্ট নেতা) প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, একটি অবাধ-নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা আমরা দিচ্ছি। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকার কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। শুধু যে সব বিষয়ে ইসি সহযোগিতা চাইবে, সেসব বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে।’
খালেদা জিয়ার কারামুক্তি বিষয়ে একপ্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা তো আইনি বিষয়। আমার তো মনে হয়, সংলাপের মধ্যে এটা আসতে পারে না। খালেদা জিয়া যে দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলেন, এই মামলাগুলো কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেওয়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ড. কামাল হোসেনকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে দেখুন আপনি বলুন, আপনিও তো ইলেকশান করেছেন, সেই ৭৩ সাল থেকে অনেকবার ইলেকশান করেছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচন ছাড়া কোনও নির্বাচনেই সেনা বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার ছিল না।’
সংলাপে বিএনপির প্রতিক্রিয়া বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা খুশি কী অখুশি, এটা তারা বলতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রীকে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আপনি যে কথাগুলো বলেছেন, তার অনেক কিছুই আমরা জানতাম না। তিনি বলেছেন, তিনি আজকের সংলাপে সন্তুষ্ট।
আবারো সংলাপে বসার ব্যাপারে একপ্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের নেত্রী বলেছেন, তার দরোজা সবসময় উন্মুক্ত। ৮ তারিখ পর্যন্ত আমাদের আরো কয়েকটি সংলাপ আছে। তবে ৮ তারিখের পর তারা যদি মনে করেন, সংলাপের দরকার আছে, আমাদের ইনফরমেশন দিলে আমরা অবশ্যই নেত্রীর পক্ষ থেকে তাদের ইনভাইট করবো।
নিউজওয়ান২৪/এমএম