‘আমরা কোনোদিনই সংবিধান লঙ্ঘন করি নাই’: আইনমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিউজ ওয়ান২ ৪
প্রকাশিত : ০৯:২১ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ রোববার

ফাইল ছবি
সংবিধান লঙ্ঘনের ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমরা কোনোদিনই সংবিধান লঙ্ঘন করি নাই। আর সংবিধান লঙ্ঘন করার জন্য যদি কখনো আদালতে দাঁড়াতে হয় আমরা দাঁড়াবো।’
রবিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সদ্য যোগদানকৃত বিচারকদের জন্য আয়োজিত দ্বিতীয় ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি কিন্তু বিজ্ঞ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনকে এই ব্যাপারে শক্তভাবে জবাব দিতে পারতাম। কিন্তু আমার বয়োজ্যেষ্ঠদের সাথে দুর্ব্যবহার করার অভ্যাস নেই। সেই জন্য আমি করবো না। কিন্তু আমি অত্যন্ত সবিনয়ে বলবো যে, আমরা সংবিধান লঙ্ঘন করি না।’
এর আগে শনিবার চট্টগ্রামের জনসভায় ড. কামাল হোসেন বলেছিলেন, ‘আমাদের ৭ দফা দাবি না মানলে এটা অমান্য করার জন্য বিচার হবে। ২০১৪ সাল থেকে সংবিধান লঙ্ঘন করার জন্য যে জবাবদিহিতা, সেটাও জনগণ আপনাদের কাছ থেকে আদায় করে ছাড়বে। সরকারকে বলব, সময় থাকতে ৭ দফা দাবি মেনে নিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের সিদ্ধান্তকে অমান্য করলে, উপেক্ষা করলে যে শাস্তি আপনারা পাবেন সেটা কল্পনাও করতে পারবেন না।’
আইনমন্ত্রী ড. কামালের দিকে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন সংবিধান (খসড়া) প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। অথচ তারা যে সংবিধান দিয়ে গেছেন তার অনেক কিছুই আজকে ড. কামাল হোসেন অস্বীকার করছেন।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও সংশোধনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামীকাল (সোমবার) আরপিও সংশোধন বিল মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। বিলটি পাসের জন্য বেশকিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং তারপর জাতীয় সংসদে পাস করতে হবে। তাই এ বিষয়ে আগামীকাল মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনা চাওয়া হবে এবং মন্ত্রিপরিষদ যে নির্দেশনা দিবে সে মোতাবেক কাজ করা হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী তার বক্তব্যে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আর সংশোধন হবে না। আমি তার সাথে আর একটা কথা বলতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং অন্যকোনো স্বাধীনতাই খর্ব করার জন্য করা হয়নি। এটা করা হয়েছে শুধু সাইবার নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য। সেক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যেটা হয়েছে তাতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বা সাংবাদপত্রের স্বাধীনতা কোনোটাই ব্যহত হবে না।’
সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবীতে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন সড়কে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য যেমন সহায়ক হবে তেমনি সঠিকভাবে বাস চালালে তা চালকদের জন্যও সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, ‘তারা বোধ হয় আইনটা সঠিকভাবে না বুঝেই ধর্মঘট করছেন। কারণ এই আইনে এমন কোনো শর্ত বা প্রভিশন নাই যে অন্যায় না করা সত্ত্বেও চালকদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। আমি তাদেরকে আহ্বান জানাবো তারা যেন এই পথ পরিহার করে।’
অনুষ্ঠানে বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দেশের আদালতসমূহের মামলাজট নিরসন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ মামলাজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।
তিন দিন মেয়াদী এ প্রশিক্ষণে জেলা জজ পদমর্যাদার ৪৫ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিয়েছেন।
নিউজওয়ান২৪/টিআর