NewsOne24

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাল্যবিয়ে নিয়ে সচেতনা

নিউজ ডেস্ক

নিউজ ওয়ান২ ৪

প্রকাশিত : ১০:৪৫ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৮ মঙ্গলবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শুরু হয়েছে বাল্যবিবাহ। তবে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের বিয়ের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আর  বিশেষ করে বাল্যবিয়ে ঠেকাতে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের বয়সের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া এবং বাল্যবিয়ে নিয়ে সচেতনাও বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান তারা।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস ঘটনায় নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। আর তারা এরই মধ্যেই ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নিজেদের সন্তানদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করছেন।

মিয়ানমারে নিজেদের সন্তানের বিয়ে দিতে নানা আইনি জটিলতায় পড়তে হয় বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া এক শরনার্থী। আইনি জটিলতা ছাড়াও গুনতে হয় বিশাল অংকের টাকা। আর বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে কোনও ধরনের বাধ্যবাধকতা না থাকায় সহজেই নিজেদের সন্তানদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

রোহিঙ্গা নারী রহিমা খাতুন (৩২) বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে খুব কষ্টে আমাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। ১৮ বছরের নিচে তো দূরের কথা উপযুক্ত কোন সন্তানদের বিয়ে দিতে সরকারের অনুমতির জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হতো।’

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সদ্য বিয়ে হওয়া দম্পত্তি হয় আবুল কালাম ও সুফিয়া বেগমের কাছে তাদের নতুর সাংসারিক জীবন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয। নববধূ সুফিয়া কোনও কথা না বললেও স্বামী আবুল কালাম বলেন, ‘রাখাইনের চেয়ে তারা ক্যাম্পেই বেশি আনন্দ উপভোগ করছেন। কারণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নেই সেনাবাহিনীর ভয়। নেই কোনও উগ্রপন্থী মগদের ভয়। স্বল্প খরচেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করছেন তারা। একটু অভাব হলেও খুব ভালোই দিন যাচ্ছে তাদের।’

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নিকারুজ্জামান বলেন, ‘প্রথমে এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের সামাল দেওয়া সরকারের পক্ষে অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ছিল। এতে করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে পরিবর্তন আনতে সবাইকে হিমশিম খেতে হয়। এখন সব কিছু পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি ক্যাম্পে বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের বিয়ের ওপরও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। 

বাল্যবিয়ে ঠেকাতে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের বয়সের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। অপ্রাপ্ত বয়স্ক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের বিয়ে না দিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়, সেহেতু তাদের কাবিননামা ও নিবন্ধন করার প্রশ্নই আসে না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তারা তাদের সামাজিক নিয়ম অনুযায়ী সন্তানদের বিয়ে দিচ্ছে। এরপরও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত ক্যাম্প ইনচার্জরা ১৮ বছরের নিচে যাতে বিয়ে না দেয় সে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করছেন।’

তবে, শুধু বিয়েই নয়; জন্মনিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আরও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন সুশীল সমাজ ও রোহিঙ্গা বিশ্লেষকরা।

নিউজওয়ান২৪/এএস