NewsOne24

চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ছে বেশি গভীরতার বড় জাহাজ, লাইটারেজ ঝক্কি দূর

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ১২:১২ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ সোমবার

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে বেশি গভীরতার (১০ মিটার ড্রাফট) প্রথম জাহাজ। এরপর থেকে নিয়মিতই অধিক গভীরতার জাহাজ এই বন্দরের জেটিতে ঢুকবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

রবিবার বিকেলে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এমভি কমন এটলাস নামের একটি চিনিবাহী জাহাজ বন্দরের সিসিটি ১ জেটিতে ভেড়ার মাধ্যমে বেশি গভীরতার জাহাজ এই বন্দরে ভেড়ার পথ সুগম হলো।  

৩৬ হাজার টন চিনিবাহী ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ জাহাজ বন্দর চ্যানেল দিয়ে ঢুকে জেটিতে ভেড়ার মাধ্যমে বন্দরের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে বলে জানানবন্দর সচিব ওমর ফারুক।

প্রথমবারের মতো এত বেশি ড্রাফটের (পানির নিচের অংশে জাহাজের গভীরতা) এবং বড় দৈর্ঘ্যের জাহাজ জেটিতে ভেড়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যয় কমবে বলে জানান বন্দর সংশ্লিষ্টরা।

রবিবার বিদেশি এ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়লেও আনুষ্ঠানিকভাবে আজ (সোমবার) বন্দরের সিসিটি ১ জেটিতে বেশি ড্রাফটের জাহাজের বার্থিং কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

বন্দর সচিব জানান, বেশি গভীরতার জাহাজ বন্দরে ঢোকার বিষলে একটি কারিগরি কমিটি কাজ করছে।

এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারতো।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৫ সালে কর্তৃপক্ষ বন্দরে প্রবেশকারী জাহাজের ড্রাফট ও দৈর্ঘ্য বাড়িয়েছিল। তার আগে আরও কম ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তো জেটিতে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৯টি জেটির মধ্যে ১৭টিতে জাহাজ ভেড়ে।

বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে লন্ডনভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেল নিয়ে জরিপ-গবেষণা শেষে ১০ মিটার ড্রাফট এবং দুইশ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ এখানকার জেটিতে ভিড়তে পারবে বলে সুপারিশ করে। এরপর বন্দর কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল যার ফল এবার এলো। 

এতদিন বড় জাহাজ (বেশি ড্রাফটের) বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে অবস্থান করত এবং সেখানে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাস করে কম ড্রাফটের জাহারে তুলে বন্দরের জেটিতে আনা হতো। বেশি ঝামেলা এবং ব্যয়সাধ্য এই পদ্ধতি। এবার তা থেকে মুক্ত হতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।

বন্দর সচিব ফারুক আরও জানান, জাহাজের গভীরতা বেশি হওয়ায় পণ্য পরিবহনের পরিমাণও বাড়বে। এতে আমদানি-রপ্তানিকারকরা উপকৃত হবেন, সময় কম লাগবে এবং পরিবহন খরচও কম পড়বে। পাশাপাশি বন্দরের সক্ষমতাও বাড়বে।

বন্দর কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, বিদ্যমান ড্রাফট অনুযায়ী একটি জাহাজে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টিইইউএস (২০ ফুট দৈর্র্ঘ্যের কন্টেইনার) পরিবহন করা হতো। নতুন হিসাবে এখন প্রতি জাহাজে ২৬০০ থেকে ২৮০০ টিইইউএস কন্টেইনার আনা যাবে।

তারা জানান, আরও বড় জাহাজ বন্দরে সরাসরি ভেড়ার সুযোগ তৈরি হলে বহিঃনোঙরে পণ্য ওঠানামার ব্যয়ও কমবে। এটা পণ্যমূল্য হ্রাসেও ভূমিকা রাখতে পারে।