NewsOne24

এবার বাসমতি চাল নিয়ে ভারত-পাকিস্তান ‘যুদ্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ১২:৫০ এএম, ৮ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে নয়। এবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে মনোলোভা বাসমতি চাল নিয়ে। এই চালের এক্সক্লুসিভ ট্রেডমার্ক দাবি করে আবেদন করেছে ভারত। এর ফলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে এই চালের একক মালিকানা হিসেবে টাইটেল থাকবে ভারতের। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

কিন্তু তাদের এমন আবেদনে পাকিস্তানের ইমেজে বড় রকমের ধাক্কা লেগেছে। তারা মনে করছে এমন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি বাজার থেকে পাকিস্তানকে হঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর লাহোরের আল বরকত রাইস মিলের মালিক গোলাম মুরতজা পারমাণবিক বোমা হামলার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, মনে হচ্ছে এর মাধ্যমে আমাদের ওপর (ভারত) পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করছে।

এ অবস্থায় ভারতের উদ্যোগের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান। 

বিরিয়ানি থেকে পোলাও। ভারত ও পাকিস্তানের রসনাবিলাসে অভিন্ন খাদ্য উপাদান। কিন্তু এর মূলে রয়েছে ব্যতিক্রমী লম্বা মাপের বাসমতি চাল। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে বাসমতি নিজেদের চাল হিসেবে মালিকানা দাবি করেছে ভারত। তারা ইউরোপিয়ান কমিশনের কাছে এ জন্য ‘প্রটেকটেড জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন’ (পিজিআই) দাবি করে আবেদন করেছে। 

উল্লেখ্য, পিজিআই মর্যাদা দেওয়া হলে কোনো ভৌগলিক এলাকায় বিশেষ পণ্য উৎপাদনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর অর্থ হলো, সংশ্লিষ্ট পণ্যটি ওই এলাকায় উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং প্রস্তুত হতে হয়। পিজিআই মর্যাদা পেয়েছে এমন পণ্যের মধ্যে আছে ভারতের দার্জিলিংয়ের চা, কলম্বিয়ার কফি, ফ্রান্সের প্রক্রিয়াজাত মাংস প্রভৃতি। জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি চাল রপ্তানিকারক ভারত। তারা বছরে ৬৮০ কোটি ডলারের চাল রপ্তানি করে। অন্যদিকে পাকিস্তান বিশ্বে চাল রপ্তানিতে চতুর্থ। তারা বছরে ২২ কোটি ডলারের চাল রপ্তানি করে।

ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে গোলাম মুরতজার বাসমতি চাল উৎপাদনের খামার। তিনি বলেছেন, ভারত এসব তৎপরতা শুরু করেছে যাতে আমাদের টার্গেট করা বাজার তারা গ্রাস করতে পারে। এমনিতেই আমাদের পুরো চাল উৎপাদনকারী খাত ক্ষতিগ্রস্ত। করাচি থেকে কলকাতা-দক্ষিণ এশিয়ার সর্বত্র প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকে এই জনপ্রিয় বাসমতি চাল। মাংস আর সবজির সঙ্গে এই চালের ভাতের কদর সর্বত্র। তাই বাসমতি চালকে কেন্দ্র করে নানা রকম বিরিয়ানির ডিশ প্রচলন হয়েছে। বিশেষ করে বিয়ে বা কোনো উৎসবে ভারত, পাকিস্তানে তো এই চালের ডিশ থাকতেই হবে।

তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুই দেশ যদি চুক্তি করতে ব্যর্থ হয় এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিয়ম যদি ভারতের পক্ষে যায়, তাহলে ইউরোপিয়ান আদালতে আপিল করতে পারবে পাকিস্তান। কিন্তু তাতে দীর্ঘমেয়াদী রিভিউ প্রক্রিয়ায় তাদের চাল উৎপাদনকারী শিল্প বিকল হয়ে পড়বে।