NewsOne24

পদ্মাসেতু: যোগাযোগ ছাড়িয়েও বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ১২:০৬ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২০ শুক্রবার

পদ্মা সেতুতে বসানো হচ্ছে ৪১তম স্প্যান

পদ্মা সেতুতে বসানো হচ্ছে ৪১তম স্প্যান

পদ্মাসেতুর ৪১তম স্প্যান বৃহস্পতিবার সকালে স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর ‘টু-এফ’ নামের এ স্প্যানটি স্থাপনের মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো পুরো সেতুর ৬ হাজার ১৫০ মিটার। 

এর আগে বুধবার দুপুরে ৪১তম স্প্যানটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছায় বলে নিশ্চিত করেন পদ্মাসেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের।

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের বিজয় দিবসে পদ্মাসেতু উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। পদ্মাসেতুতে দ্বিতল ব্যবস্থায় বাস-ট্রাকের পাশাপাশি চলবে ট্রেনও।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মাসেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এর ফলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বাড়বে এক থেকে দেড় শতাংশ। এই সেতুর কারণে গড়ে উঠবে ভারী শিল্প কারখানাসহ নানা প্রতিষ্ঠান। ফলে কমে যাবে দারিদ্র্যের হারও।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, পদ্মাসেতু নির্মাণ হলে শুধু যোগাযোগের উন্নয়ন নয়, বদলে যাবে দেশের অর্থনীতিও। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি মানুষের আস্থা এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মাসেতু নির্মাণ হওয়ার পর ট্যুরিজম ব্যবস্থায়ও আসবে ব্যাপক পরিবর্তন।

ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ায় ফেরির বিড়ম্বনা এড়াতে দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ গাড়িই চলবে পদ্মাসেতু দিয়ে। দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে পদ্মাসেতু। ট্রান্সএশীয় রেলপথের অংশ হলে এতে বাড়বে মালবাহী ট্রেনের চলাচল।

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক বলেন, পদ্মাসেতু চালু হলে আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটিরও সুযোগ বাড়বে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আহরণেরও সুযোগ সৃষ্টি করবে পদ্মাসেতু।

বিশ্লেষকদের মতে, পদ্মাসেতু শুধু রড-সিমেন্টের তৈরি কোনো কাঠামোই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৭ কোটি মানুষের আবেগ ও ভালোবাসা। এই সেতু হবে বাংলাদেশের সক্ষমতার বৈশ্বিক উদাহরণ, যা আগামী দিনগুলোতে সৃষ্টি করবে দেশীয় অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার হাতছানি।