NewsOne24

দক্ষিণের নেতৃত্বে আসছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও ত্যাগী নেতারা

নিউজ ডেস্ক

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ০৯:৫৭ এএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৯ শুক্রবার

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

আওয়ামী লীগের রাজনীতির কেন্দ্র বলে পরিচিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ। শনিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। 

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনকে ঘিরে এরইমধ্যে নেতাকর্মীদের মাঝে চাঙাভাব লক্ষ্য করা গেছে। নতুন নেতৃত্ব কারা আসছেন এ নিয়েও চলছে জোর আলোচনা-সমালোচনা।

অনেকেই আবার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে ঘষামাজা করছেন। কেউ কেউ নিজ প্রার্থীর সাফাই গাইছেন। ৩০ নভেম্বর শত জল্পনা-কল্পনার নিরসন হবে।

এরইমধ্যে কৃষকলীগ, জাতীয় শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও যুবলীগের সম্মেলন শেষ হয়েছে। সব সংগঠনেই এসেছে নতুন নেতৃত্ব। এরই ধারাবাহিকতায় মহানগর রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বেও আসছে নতুন নতুন মুখ- এমন আভাস দিয়েছেন দলটির হাইকমান্ড।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন নেতৃত্বে কারা আসবেন এর একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাউন্সিলের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির, ত্যাগী, ক্লিন ইমেজ যাচাই-বাচাই করে একটি সুন্দর ও চ্যালেঞ্জিং কমিটি উপহার দেবেন তিনি।

এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে নতুন ও পুরনো নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণে সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক পদে একজন ঢাকার স্থানীয় বা পুরান ঢাকার নেতৃত্বে আনার রীতি চালু আছে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে। 

ঢাকার স্থানীয় হিসেবে আলোচনায় আছেন- বর্তমান সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির, অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মরহুম এম এ আজিজের ছেলে ওমর বিন আজিজ (তামিম), ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, যারা দলের জন্য ত্যাগী, ক্লিন ইমেজের এবং  কোনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নেই তাদেরকেই এবার মূল্যায়ন করবেন দলের সভাপতি।

দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে যারা আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন-

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। এরআগে তিনি অবিভক্ত ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী। তিনি এরআগে ওয়ারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির। তিনি এরআগে বৃহত্তর লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সাঈদ খোকন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের ছেলে। ১৯৮৭ সালে ওয়ার্ড শাখার আইন বিষয়ক সম্পাদক, ২০০৪ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মো. নজিবুল্লাহ হিরু। তিনি যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক, উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আইন সম্পাদক, আওয়ামী লীগ কর্তৃক গঠিত ঢাকা বিভাগীয় আইন সহায়তা কমিটির (২০০২-২০০৮) সদস্য সচিব ছিলেন। এছাড়া ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিগ্যাল অ্যাডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যানসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

ড. আওলাদ হোসেন। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস, ২০০১-২০০৮) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন তিনি।

সাধারণ সম্পাদক পদে যারা আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন-

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ রায়। এরআগে তিনি  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন। তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আহ্বায়ক, ছাত্রলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য ছিলেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার। এরআগে তিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ১২ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল। তিনি ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ তাইকোন্ডো ফেডারেশনের সভাপতি, ধানমন্ডি থানা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য, ঢাকা ১২ আসন উন্নয়ন কমিটির সদস্য সচিবসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেন। এরআগে তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বন ও পরিবেশ বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-দফতর সম্পাদক মো. মিরাজ হোসেন। তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সহ-সভাপতি, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। এর ৩ বছর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দু’ভাগে বিভক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়।

নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড