NewsOne24

বাবরি মসজিদ মামলা: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় মন্দিরের পক্ষে

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ১২:৫৩ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৯ শনিবার

বহুল প্রতীক্ষিত  অযোদ্ধার বিতর্কিত রাম মন্দির-বাবরি মসজিদের ভূমি নিয়ে বিরোধ মামলার রায় হয়েছে মন্দিরের পক্ষে। অর্থাৎ বিতর্কিত ওই  স্থানে রাম মন্দির নির্মিত হবে। তবে এর বিপরীতে নতুন করে একটি বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিম ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি দেওয়া হবে অন্যত্র।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের এই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আব্দুল নাজির।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে  বলা হয়েছে, অযোদ্ধার বিতর্কিত রাম মন্দির-বাবরি মসজিদের স্থানে রাম মন্দির নির্মিত হবে; বিকল্প হিসেবে অন্যত্র বাবরি মসজিদ

নির্মাণের জন্য মুসলিম ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি প্রদান করা হবে।

রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি গগৈ বলেন, `বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে জমির মালিকানা ঠিক করা সম্ভব নয়। কাঠামো থেকে কোনো কিছুর মালিকানা দাবি করা যায় না। কারও বিশ্বাসে যেন অন্যের অধিকার হরণ না হয়।'

প্রধান বিচারপতি বলেন, `ভারতের প্রত্মতাত্ত্বিক সংস্থা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার খননের ফলে যে সব জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট, সেগুলো ইসলামিক নয়।' প্রায় আধা ঘণ্টা সময় ধরে মামলায় রায় পড়ে শোনান বিচারপতি গগৈ। এ সময় তিনি বলেন, যে রায় ঘোষণা করা হলো; তা বিচারক বেঞ্চের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত।

রাম জন্মভূমি দাবি করা অযোদ্ধার বিতর্কিত এই ভূমি মালিকানাকে কেন্দ্র করে ১৯৯২ সালে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দেশটির কট্টরপন্থী হিন্দুরা ষোড়শ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়ে মন্দির নির্মাণ করতে গেলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়।

ভারতীয় হিন্দুরা মনে করে, তাদের দেবতা রামের জন্মভূমিতে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু মুসলিমরা বলছে, বাবরি মসজিদের স্থানে রামের জন্মের কোনো আলামত নেই। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানী নয়াদিল্লির পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব রাজ্যের স্কুল-কলেজও শনিবার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রধান ওপি সিং ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের মূল ইস্যু হচ্ছে যেকোনো উপায়ে শান্তি রক্ষা করা। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৭০ জনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবরি মসজিদ মামলার রায় নিয়ে উসকানিমূলক বার্তা ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।

এখানে উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে যখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়; তখন বিজেপির যেসব নেতা সেই ধ্বংসযজ্ঞে ভূমিকা রেখেছিলেন বর্তমানের ক্ষমতাসীন বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তাদের কয়েকজন।।

একই ইস্যুতে ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখাড়া, রামলালার মধ্যে জমি সমান ভাগে করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এর ফলে হিন্দুরা পায় জমির তিন ভাগের দু’ভাগ। মুসলিমরা এক ভাগ। কিন্তু এই রায়ের বিরুদ্ধে সব পক্ষই সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।

এদিকে, রায়কে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা ও মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে