ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

এ কেমন আজব হোটেল? (ছবিসহ)

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ৩ নভেম্বর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

পুরো পৃথিবীতে এমন কয়েকটি হোটেল আছে যেখানে কাটানো একটি রাত জীবনের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে। যার কোনটি সমুদ্রের গভীরে, কোনটি আবার মাটির নিচে, আবার কোনটি ঝুলছে গাছের ডালে। এমনই অবিশ্বাস্য ৫টি হোটেলের কথা আজকে জানাবো।

ক্যাকলাস্টিনিন ইগ্লোস আর্টি রিসোর্ট:

মানুষকে খোলা চোখে কল্পনার রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার মত অবিশ্বাস্য রকমের সুন্দর এই হোটেল। যেখানে ঝকঝকে কাচের ভিতর থেকে শুয়ে শুয়ে উপভোগ করতে পারবেন উত্তর দিকের রাতের আকাশের সুমেরু প্রভা। আর উত্তরের বৈরী ঠান্ডা আবহাওয়া আপনার আনন্দে একটুও বাধা দিতে পারবে না। উত্তর ফিনল্যান্ড স্বাভাবিক ভাবেই প্রচন্ড ঠান্ডা একটি অঞ্চল। এখানে তাপমাত্রা কখনও কখনও মাইনাস ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। কিন্তু তখনও এই হোটেল রুমের বিশেষ গ্লাস, ভেতরে কোন ঠান্ডাই ঢুকতে দিবে না। এমন কি চাইলে রুমের তাপমাত্রা আপনি আপনার পছন্দ মতো ঠিক করে নিতে পারবেন। রাতের আকাশে সুমেরু প্রভা দেখার যে অভিজ্ঞতা এখানে ভ্রমনকারীদের হয়ে থাকে, তা তারা কোন দিনই ভুলতে পারেন না। সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত, বছরের এই ঠান্ডা মৌসুমে খোলা থাকে হোটেলটি। এক দিন - এক রাত এই হোটেলে থাকার জন্য গুনতে হবে ৫০০ ডলার।

মন্টানা রিসোর্ট:

তানজানিয়ার পেম্বা দ্বীপে এমন একটি হোটেল রয়েছে, যা সত্যিকার অর্থে অন্য এক জগৎ। পানির ১৩ ফুট নিচে এই হোটেল রুমটি তীর থেকে অনেকটাই সমুদ্রের ভিতরে অবস্থিত। এই রিসোর্টটি খুবই জনপ্রিয় একটি হোটেল। যেখান থেকে আপনি সমুদ্র গভীরের সৌন্দর্য খুব কাছে থেকেই উপভোগ করতে পারবেন। সমুদ্রের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার এর থেকে ভালো আর কোন উপায় হতে পারে না। এতটা নির্জন এবং প্রশান্তি পৃথিবীর আর কোন হোটেলেই পাওয়া যাবে না। হোটেলের একটি মাত্র রুম, আর এর চার পাশে রয়েছে জানালা। যা থেকে চমৎকার ভাবে সমুদ্রের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। রাতের ব্যাপারটা আরও বেশি মজার। রুমের বাইরে করা লাইটিং আলোয় কাছে আসা সকল জলজ প্রানীকে দেখতে পাওয়া যায়। এটা তখন অনেকটাই নৈসর্গিক হয় উঠে।

হেন্না হোটে:

পৃথিবীর এক মাত্র হোটেল হেন্না হোটেল, যেটি পরিচালিত হয় রোবট দ্বারা। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি চালু হয় এই হোটেলটি। এখানে রয়েছে প্রায় ১৪৪ টি রুম। সব গুলো রুমে কাজ করার জন্য রয়েছে ১৮৬ টি রোবট। কখনও একটি মহিলা রোবট আবার কখনও একটি ডায়নোসর রোবট আপনাকে জানাতে পারে অভ্যর্থনা। এরাই খুঁজে দিবে পছন্দের সেরা রুমটি। এই হোটেলে থাকাকালে আপনাকে কোন রুমের চাবি দেওয়া হবে না। কারন এ হোটেলে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রেস ডিটেক্টর সিস্টেম। কখনও কিছুর প্রয়োজন হলে রুমে থাকা কম্পিউটারে রিকুয়েস্ট করতে হবে। তখন কোন একটি রোবট আসবে আপনার সমস্যা সমাধানের জন্য। হোটেল সম্পর্কে কিছু জানার হলে তার সব উত্তর দিবে বেডের পাশে থাকা একটি রোবট। খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নের কাজ সব কিছুই করে এখানকার রোবট গুলো। তবে হাতে গোনা ৮ – ১০ জন মানুষ প্রতিদিন এখানে আসেন। যারা রোবট নয়। হোটেলের সব কিছু ঠিক মতো হচ্ছে কিনা সেটি দেখাই তাদের দায়িত্ব। রোবট মানুষের জীবনকে কতটা সহজ করে দিতে পারে তার একটি ছোট উদাহরণ এই হেন্না হোটেল।

ফ্রি স্পিরিট স্ফিয়ারস:

এই হোটেলটি যেকোন মানুষের জন্য একটি ভিন্ন ধর্মী অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। হোটেলের রুম যখন নির্জন কোন জঙ্গলে ভেতর, মাটি থেকে অনেকটা উঁচুতে, বড় বড় গাছের ডাল পালার মাঝখানে ঝুলছে- তখনতো এটাকে ভিন্ন ধর্মী বলতেই হবে। এখানে রয়েছে গোলক আকৃতির ৩ টি রুম। ৩ টি রুমের রয়েছে আলাদা আলাদা বিশেষত্ব। খানিকটা জটিল প্রক্রিয়ায় ঝুলিয়ে রাখা এই রুম গুলোতে পৌঁছাতে আপনাকে কাঠের সিঁড়ি ব্যবহার করতে হবে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক হোটেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুনাম রয়েছে এই হোটেলের। অনেকটাই উঁচুতে এবং গাছ গাছালির ভেতর থাকা অবস্থায় এই দ্বীপ জঙ্গলটির ভেতরের সৌন্দর্য খুব ভালো ভাবেই উপভোগ করা যাবে। সমুদ্র থেকে আসা মৃদু বাতাসে মনে দোলা উঠবে।অনন্য এই হোটেলের আইডিয়া অনেক মানুষকেই আকৃষ্ট করে। আর তাই তো বছরের যে কোন সময়েই হোক কমপক্ষে ৩ মাস আগে আপনাকে অগ্রিম বায়না করতে হবে হোটেলটিতে এক বার ঘুরে আসার জন্য।

জুকাস জারভি আইস হোটেল:

অদ্ভুত কোন হোটেলের তালিকা করলে এই হোটেলটিকে ১ নম্বরে রাখতে হবে। সুইডেনের জুকাস জারভি হোটেল পুরোটাই বরফের তৈরি। আর যারা শীতকে ভয় পান হোটেলটি মূলত তাদের জন্য নয়। কারন, এই হোটেলের বিছানা থেকে শুরু করে পানির গ্লাস পর্যন্ত সবই বরফের তৈরি। এখানে সব সময় তাপমাত্রা মাইনাস ২ ডিগ্রী থেকে ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে। ৬৪ হাজার স্কয়ার ফিটের এই বিশাল হোটেলের ৫৫ টি বেড রুম , ১২ টি রেস্টুরেন্ট এবং একটি চার্চ রয়েছে। অনেকে নিজেদের বিয়েকে স্মরনীয় করে রাখার জন্য এই চার্চে আসেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে। সর্বপ্রথম এই অঞ্চলের হোটেল গুলোতে ভ্রমনকারীদের চাপ সামাল দেওয়ার জন্য ১৯৯০ সালে এই বরফের হোটেলটি তৈরি করা হয়। কিন্তু, এটিই এখন ভ্রমনকারীদের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর বরফ কেটে এই হোটেলটি পূনঃনির্মান করা হয়। আবার শীত শেষে ভেঙ্গে ফেলা হয়। তাই শুধু জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত হোটেলটি সবার জন্য খোলা থাকে।

নিউজওয়ান২৪/এএস