ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

ভ্যাঙ্কুভারে রবীন্দ্রনাথের সফর

প্রকাশিত: ১৮:১৭, ১১ মে ২০১৪   আপডেট: ১২:১১, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনে ১৭ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। কিন্তু একবারও অস্ট্রেলিয়া যান নি; তাই নিয়েই কলাম লিখেছেন বন্ধুবর অজয় দাশগুপ্ত। আমাদের সৌভাগ্য যে, তিনি অন্তত একবার কানাডায় এসেছিলেন। কানাডা নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন, বিবৃতিও দিয়েছেন। তাঁর শিল্পকর্ম নিয়ে চিত্রকর্ম প্রদর্শনীও হয়েছে। কানাডায় এখন তো রীতিমত নানা ভাবেই রবীন্দ্রচর্চা হচ্ছে।
শতবর্ষ আগে ভ্রমণ এখনকার মত এত সহজ জলভাত ছিলো না। জল-জাহাজের ভ্রমণ ছিল খুবই সময় সাপেক্ষ এবং কঠিন ব্যাপার। তারপরও তিনি ১৯১৬ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত ১৮ বছরই বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে কাটান। ফলে তাঁর রচিত ভ্রমণ-সাহিত্যও সমৃদ্ধ।

১৯১৩-এ নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির পর সারা বিশ্ব ভারতীয় কবি রবীন্দ্রনাথের ব্যাপারে বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠে। ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে আসতে থাকে আমন্ত্রণের পর আমন্ত্রণ। অধিকাংশ আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ; জাহাজযোগে বহু দেশে গেছেন ; পরিচিত হয়েছেন বিভিন্ন দেশের বিদ্বজ্জন ও রাজ-রাজড়াদের সাথে। বহু স্থানে, বহু বিদ্যায়তনে, বহু সভায় স্বকণ্ঠে কবিতা পাঠ করে শুনিয়েছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন। তাঁর জীবনোপলব্ধি ও দর্শন এবং তাঁর কাব্যের মর্মবাণী এভাবে কবি সরাসরি বিশ্বমানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। প্রবাসের জীবনে তাঁর হাতে পূরবীর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাব্য রচিত হয়েছে। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের ফলে বহুজন তাঁর কবিতা অনুবাদে উদ্যোগী হয়েছেন।

১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঁচটি মহাদেশের তেত্রিশটিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন।(১) তবে ইংল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাস্ট্র বাদ দিলে অন্যান্য দেশসমূহ ভ্রমণ করেছেন ১৯১৩-তে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির পর।

দেশগুলোহলোঃ ফ্রান্স, হংকং, চীন, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, জার্মানী, ডেনমার্ক, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, চেকোশ্লোভাকিয়া, আর্জেন্টিনা, ইতালি, নরওয়ে, হাঙ্গেরী, যুগোশ্লাভিয়া, বুলগেরিয়া, রুমানিয়া, গ্রীস, মিশর, সিঙ্গাপুর,ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান, বার্মা, হল্যান্ড, সোভিয়েট রাশিয়া, ইরান, ইরাক এবং শ্রীলংকা। (উইকিপিডিয়ার এই তালিকায় ভ্যাঙ্কুভার ভ্রমণের কথা উল্লেখ নেই!)

যাহোক, তাঁর বিদেশ ভ্রমণ শুরু হয় ১৮৭৮ সালে প্যারিস হয়ে লণ্ডন গমনের মাধ্যমে। ১৯৩৪-এ শ্রীলংকা (সিংহল) ভ্রমণ শেষে কবি শান্তিনিকেতনে ফেরেন ২৮ জুন। এরপর তিনি আর বিদেশভ্রমণে যান নি। এই ভ্রমণগুলির মধ্যে অনেকগুলিই রবীন্দ্রনাথের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। এর মাধ্যমে তিনি ভারতের বাইরে নিজের রচনাকে সুপরিচিত করে তোলেন এবং প্রচার করেন তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শ। একই সঙ্গে বহু আন্তজার্তিক সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সংগে তাঁর সাক্ষাৎ হয়।(২)

আধুনিক ভারতের শুভেচ্ছা দূত রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের ভ্যাঙ্কুভার ভ্রমণ ছিলো ১৯২৯ সালে। তিনি এসেছিলেন শিক্ষা শীর্ষক বক্তৃতা দিতে | As one of the earliest educators to think in terms of the global village, Rabindranath Tagore’s educational model has a unique sensitivity and aptness for education within multi-racial, multi-lingual and multi-cultural situations, amidst conditions of acknowledged economic discrepancy and political imbalance. তাই এই বক্তৃতা সম্পর্কে টরন্টো বিশ্ব বিদ্যালেয়ের রবীন্দ্রনাথ এবং সত্যজিৎ বিষয়ক শিক্ষক ক্যাথলিন এম ও’কনেলের মূল্যায়নঃ In 1929 Rabindranath Tagore came to Vancouver to address a conference of the National Council of Education of Canada. This article analyzes his reception as reported in the news media, but primarily examines the educational priorities he chose to elaborate. One major theme that he emphasized was ‘freedom’ in education: physical, mental, spiritual, and moral freedom, and freedom from racial and national prejudice. In particular he stressed the role of leisure in education and human life at large, in contrast to relentless competition for material advantage. He urged that imagination and creativity, especially artistic creativity, be nurtured, reflecting his own experience of growing up in a remarkably creative Bengali Indian family.(৩)

সেই সময় ভ্যাঙ্কুভারে তাঁর একটি চিত্র প্রদর্শনীও হয়েছিলো। ভ্রমণ শেষে ভারতে ফিরে গিয়ে ‘অভিযান (কানাডার প্রতি)’ নামে একটি কবিতা লিখেন। তা কবি কর্তৃক ইংরেজি অনুবাদ প্রচার হয় অটোয়া রেডিওতে ১৯৩৬ সালে। কবিতাটি হচ্ছে:

বিশ্ব জুড়ে ক্ষুব্ধ ইতিহাসে
অন্ধবেগে ঝঞ্ঝাবায়ু হুংকারিয়া আসে
ধ্বংস করে সভ্যতার চূড়া।
ধর্ম আজি সংশয়েতে নত,
যুগযুগের তাপসদের সাধনধন যত
দানবপদদলনে হল গুঁড়া ।
তোমরা এসো তরুণ জাতি সবে
মুক্তিরণ-ঘোষণাবাণী জাগাও বীররবে ।
তোলো অজেয় বিশ্বাসের কেতু ।
রক্তে-রাঙা ভাঙন-ধরা পথে
দুর্গমেরে পেরোতে হবে বিশ্বজয়ী রথে,
পরান দিয়ে বাঁধিতে হবে সেতু ।
ত্রাসের পদাঘাতের তাড়নায়,
অসম্মান নিয়ো না শিরে, ভুলো না আপনায় ।
মিথ্যা দিয়ে, চাতুরী দিয়ে, রচিয়া গুহাবাস
পৌরুষেরে কোরো না পরিহাস ।
বাঁচাতে নিজ প্রাণ
বলীর পদে দুর্বলেরে কোরো না বলিদান।(৪)

কবিতা, বক্তৃতা ছাড়াও তিনি স্বদেশী অভিবাসীদের জন্য বিবৃতিও দিয়েছেন, শুরুতেই বলেছি। ‘বঙ্গ রমণীর জাপান যাত্রা’ সম্পর্কে আমরা জানি, তবে বঙ্গীয় পুরুষ কখন কবে প্রথম কানাডায় আসে, তার তেমন কোনো তথ্য জানা নেই। প্রায় একশ বছর আগে ভারতীয়দের কানাডায় প্রবেশের নানা ধরনের বাধা ছিল। তা সত্ত্বেও বহু ভারতীয় প্রশান্ত মহাসাগর-তীরস্থ বিশেষ করে ভ্যাঙ্কুভারে জীবিকার জন্য বসতির চেষ্টা করে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য রাজ অশ্বেতাঙ্গদের অবদান অস্বীকার করতে না পারায় কানাডা অভিবাসনের ক্ষেত্রে সরাসরি আপত্তি না করে কিছু নতুন আইন করে। যদি কোনো জাহাজ কোনো বিদেশের বন্দর থেকে সোজাসুজি ভাঙ্কুভারে পৌঁছায়, তবে সেই জাহাজে করেই শ্রমিকেরা কেবল আসতে পারবে, অন্যথায় নয়। ভারতের নিজস্ব জাহাজ না থাকায় কোনো জাহাজই সোজাসুজি কানাডায় পৌঁছাতো না। ১৯১৪ সালের এপ্রিল মাসে কোমাগাটা মারু নামে একটি জাহাজ চার্টার ভাড়া করে পাঞ্জাবিদের একটি দল গুরদিৎ সিংহের নেতৃত্বে কানাডা রওনা হয়। তাদের কানাডায় নামতে দেওয়া হয়নি এবং দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়। কোমাগাটা মারু কলকাতার বজবজঘাটে পৌঁছালে শিখদের বিরুদ্ধে কৃত আচরণের কঠোর সমালোচনা করা হয়। রবীন্দ্রনাথ এসব ঘটনা জানতেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাস্ট্র যাচ্ছেন এই সংবাদ পেয়ে কানাডা হতে একটি প্রতিষ্ঠান তাঁকে ভাঙ্কুভারে আসার জন্য নিমন্ত্রণ জানায়। কবি নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে বলে পাঠান যতদিন তাঁর স্বদেশবাসীকে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় অপমান ও নির্যাতন করবে, ততদিন তিনি তাদের দেশের মাটি মাড়াবেন না। (৫) অবশ্যই তার পাচঁ বছর পর কানাডার আমন্ত্রণে তিনি এসেছিলেন সেই শিক্ষা বিষয়ক বক্তৃতা দিতে।
এ সম্পর্কে ইউর্ক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অনন্যা মুখার্জি রেড লিখেনঃ Few Canadians know of him today but thousands of Canadians did 80 years ago, turning out in droves to see and hear Rabindranath Tagore, the first non-European Nobel laureate (Literature, 1913), and Asia’s iconic poet and humanist whose 150th birth anniversary fell on May 7. The event was celebrated widely, including in Toronto and, very appropriately, in Vancouver, which he visited in 1929. He went there after having declined several invitations in protest against the Komagata Maru incident of 1914, when 376 Indian immigrants were denied entry to Canada.

When Tagore finally accepted the invitation of the National Council of Education to address its triennial conference, the Vancouver Sun reported in April 1929: “Thousands sought to see and hear Tagore . . . but could not gain admission. They stood in long lines for hours outside . . . even after he had commenced speaking, they waited before the theatre doors reluctant to leave. More than any other delegate he had seized their imagination.”(৬)

‘দ্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ আডুকেশনে’র আমন্ত্রণে স্টিমার করে ১৯২৯ সালের ৭ এপ্রিল ৪৩ বছর বয়সে ১০ দিনের সফরে তিনি ভ্যাঙ্কুভারে এসেছিলেন। উঠেছিলেন ভ্যাংকুভার হোটেলে। পরদিন রোববার ভ্যাঙ্কুভারের ঢাউন টাউনে ‘দ্য প্রিন্সিপাল অফ লিটারেচার’ শীর্ষক সম্মেলনে বক্তৃতা দেন। দুই হাজার আসনের হল কানাকানায় ভর্তি হয়ে শত শত দর্শক-শ্রোতার ভীড় বাইরে আপেক্ষা করেছিল। যারা অনুষ্ঠানে ঠাঁই পান নি বা প্রবেশের সৌভাগ্য জুটেনি, তাদের দীর্ঘ সারি থিয়েটার হল থেকে গ্রান ভিল স্ট্রিট হয়ে হোটেলে ভ্যাঙ্কুভারের পাশ দিয়ে ওয়েস্ট জার্জিয়া স্ট্রিট পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো। পরে তাদের অনেকেই হোটেলে সাক্ষাৎ করেন। ১৪ এপ্রিল ‘ট্রায়েন্নিয়াল কনফারেন্স অফ দ্য ন্যাশনাল এডুকেশন অব কানাডা’তে ম্যাসেজ অব ফ্যায়ারওয়েল’এ ভাষণ দেন। ১৬ এপ্রিল ভ্যাঙ্কুভারের গভর্ণর জেনারেল লর্ড উইলিংডনের সাথে দেখা করেন এবং সে দিনই লস এঞ্জলেসের উদ্দেশে রওনা হন। যাবার পথে পাসপোর্ট হারানোর কারণে আমেরিকায় ঢুকতে পারেন নি। পরে জাপান যান। তিনি জাপান সফর করেছেন পাঁচ বার। ভ্যাঙ্কুভার সফরের সময় স্থানীয় পত্র-পত্রিকাগুলো প্রতিদিনই তা গুরুত্ত্ব দিয়ে প্রচার করে। যেমনঃ
১। ভ্যাঙ্কুভার সান, ৯ এপ্রিল ১৯২৯-এ টরন্টো ভার্সিটির প্রবীণ প্রফেসর জর্জ এম রং কবিকে ‘প্রিন্স অফ বেঙ্গল’ এবং ‘মহাকবি আর বিশ্ব শান্তি প্রেমিক’ আখ্যা দেন, তার সচিত্র সংবাদ ছাপা হয়।
২। দ্য ডেইলী প্রভিন্স, ১১ এপ্রিল ১৯২৯-এ সাংবাদিক ক্লিফফোর্ড ডলিং-এর নেয়া সাক্ষাৎকার ছাপা হয়।
৩।ভ্যাঙ্কুভার সান, ১২ এপ্রিল ১৯২৯-এ ছাপা হয় আগের দিন স্থানীয় শিখ টেম্পল পরিদর্শনের খবর।
৪। ভ্যাঙ্কুভার সান, ১২ এপ্রিল ১৯২৯-এ সাংবাদিক নোয়েল রবিন সন-এর নেয়া সাক্ষাৎকার ছাপা হয়।
৫।দ্য ডেইলী প্রভিন্স, ১৫ এপ্রিল ১৯২৯-এ তাঁর নিয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ মন্তব্য প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।
৬। এদিকে, ভ্যাঙ্কুভারে প্রথম বাঙালি তারকা বলে খ্যাত তারাকানাথ দাশ ১৯০৮ সালে ‘ফ্রি ইন্ডিয়া’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে। এটিই উত্তর আমেরিকায় দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পত্রিকা বলে মনে করা হয়। যা বঙ্গ ভঙ্গরদ আন্দোলনের ভূমিকা পালন করে। এই ফ্রি ইন্ডিয়ায় কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’… ইংরেজি অনুবাদ ছেপেছিলো।

রবি ঠাকুরের ভ্যাঙ্কুভার সফরের ৭০ বছর পর অর্থাৎ ২০০২ সালেকন্স্যুলেট জেনারেল অব ইন্ডিয়ে আর কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশান্সের যৌথ উদযোগে তাঁর স্মরণে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় কবি-মূর্তি স্থাপিত হয়েছে। এর আগে ২০০৫-এর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত টরন্টো ইউনির্ভাসিটিতে টেগোর সম্মেলনের সময় কবির ভাস্কর্য স্থাপিত হয়। এছাড়াও রয়েছে- ভ্যাঙ্কুভার টেগর সোসাইটি।
রবি ঠাকুরের ভ্যাঙ্কুভার ভ্রমণ নিয়ে বইও লেখা হয়েছে। বইটি হলোঃ Rabindranath Tagore’s visit to Canada & Japan by Prasanta Chandra mahalanobis / Publisher : Haskell House Pub, NY 1929. (এ ছাড়াও লেখাটি ছাপা হয়েছিলোঃ Issue 57 of Studies in Asiatic Literature Issue 14 of Bulletin - Visva-Bharati, Visva-Bharati, India ).


লুৎফর রহমান রিটন বলেছেন, কানাডার আকাশে আমি রবীন্দ্রনাথকে খুঁজি। পাই না। এখানকার ঝকঝকে আকাশে মেঘের পুত্র-কন্যারা অবিরাম নির্মাণ করে চলে অ্যানিমেশন মুভির অসাধারণ ক্যারেক্টারগুলোকে। ওই তো মিকি মিনি আর ডোনাল্ডডাক! ওই যে সিন্ডারেলা! পিনোকিও সাতবামন আর নিমো। লায়ন কিংয়ের সিম্বা পুম্বা আর টিমোনও আছে। কিন্তু কানাডার আকাশে রবীন্দ্রনাথ নেই।(৭)
প্রিয় রিটন, এক হিসাবে রবীন্দ্রনাথ নেই; আরেক হিসাবে আছে। আছে- বাঙালিদের চেতনায়। তাই বহুসংস্কৃতির দেশ কানাডার মূলধারার সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মতিথিতে নানান কর্মসূচি পালিত হয় । টরন্টোর প্রাচীন থিয়েটার প্রতিষ্ঠান ‘প্লিইয়াডিস থিয়েটার’ ৭ মে থেকে ৪ জুন ২০১১ পর্যন্ত রবি ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ গল্প অবলম্বনে জুরি মেহতার অনুদিত ইংরেজি নাট্যরুপ ‘দ্য পোষ্ট অফিস’ মঞ্চস্থ করছে । জন ভ্যানবুরেকের পরিচালিত এতে যারা অভিনয় করছেন তারা হলেন কানাডিয়ান শিল্পী- প্যাট্রিসিয়া মার্সিইউ, মিনা জেমস, জেনিফার ভিলাভারডি, স্যাম মোসেস, এরল সিথাল, সুগিথ ভারোগিস এবং ডিলন স্কট স্মিথ ।(৮) উল্লেখ, সঞ্জত পরিচালক দেবাশীষ সিনহা এ নাটকে ইংরেজি ভাষান্তরে যুক্ত করেছেন কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জনপ্রিয় সেই গানটি- ‘ভালো আছি ভালো থেকো/আকাশের ঠিকানায় চিঠি দিও’। ইতোপূর্বে ক’বছর আগে আরেক গ্রুপ ‘বার্কলি স্ট্রিট থিয়েটার’ সমকালীন কানাডার উপযোগী করে ‘শকুন্তলা’ মঞ্চায়ন করেছিলো ।

রবি ঠাকুরের ১৫০তম জন্মতিথি উপলক্ষে ভারত সরকার ২০১১ সালকে ‘ইয়ার অব ইণ্ডিয়া ইন কানাডা’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। খোলা হয়েছে ওয়েব সাইড- www.tagore150.toronto.ca . এদিকে টেগোর এনিভারসারি কমিটি টরন্টো’র উদ্যোগে টরন্টোর ডিস্ট্রিক স্কুল বোর্ডের আওতাধীন স্কুলগুলোর প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রেড ৩ থেকে গ্রেড ৮ পর্যন্ত রবি ঠাকুর পাঠ্য হচ্ছে।

তথ্যসূত্রঃ
১. (Krishna) Datta & Robinsob. Pulisher : Bloomsbury, London. 1995. ISBN 0747520046. Page/ 374-376
২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভ্রমণ, উইকিপিডিয়া
৩. University of Toronto Quarterly/Volume 77, Number 4, Fall 2008. pp 980-991.
E-ISSN: 1712-5278 Print ISSN: 0042-0247, University of Toronto Press, Canada.
( Kathleen M. O’Connell teaches courses on South Asia at New College, University of Toronto, Toronto, Ontario. Her research interests include Rabindranath Tagore; Satyajit Ray; and Bengali literature and cultural history.)
৪. http://www.rabindra-rachanabali.nltr.org/node/12651
৫. কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি/ মুহম্মদ হাবিবুর রহমান/বাংলা বইমেলা স্মরণিকা, টরন্টো, ২০০৮, পৃ-১৪
৬. Rabindranath Tagore: Much More Than a Mysticby Ananya Mukherjee-Reed, Daily Toronto Star, May 08, 2011. Tornto, Canada.
৭. কালের খেয়া, দৈনিক সমকাল, ডিসেম্বর ০৯, ২০১১, ঢাকা
৮. http://www.bdcan.ca/bangladeshievents/event_details.php?eid=202&type=i

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত