ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

`পুলিশ সোর্স` যে নামে ভীত মানুষ!

নিউজ ওয়ান টুয়েন্টি ফোর ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫২, ২ নভেম্বর ২০১৭  

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সোর্স কথাটি শুনতেই সবার প্রথমে মানুষের মনে গুপ্তচর কথাটি চলে আসে। আর গুপ্তচর যদি হয় পুলিশের তাহলে তো মানুষের মনে ভয়ের কোন সীমাই থাকে না।

কেননা সোনারগাঁয়ে পুলিশ সোর্সদের আতঙ্কে রয়েছে মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া পুলিশের উদ্ধার হওয়া মাদক এ সোর্সের মাধ্যমে বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় সোনারগাঁয়ের সর্বত্র পুলিশের সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলায় পুলিশের শতাধিক সোর্স কাজ করে থাকে। তাদের মধ্যে প্রায় ৩০-৩৫ জন সোর্স সরাসরি সাধারণ মানুষকে মামলা ও গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে সংশ্নিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে অর্থ আদায় করে। সোর্সদের দাবিকৃত টাকা না দিলে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখানো হয়। শেষ পর্যন্ত এ সোর্সরাই পুলিশের পক্ষ হয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে টাকা-পয়সার রফাদফা করে থাকে।

বিশেষ করে এ সোর্সদের অত্যাচারে সবচেয়ে বেশি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চলের জামপুর, সাদিপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।

সম্প্রতি পুলিশের তালিকাভুক্ত ডাকাত মমিন সোনারগাঁ থানার এক এসআইর হ্যান্ডকাফ ব্যবহার করে রাতে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে টাকা আদায় শেষে ফেরার পথে চৌরাপাড়া মোড়ে পুলিশের বারদী ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই নুরুল ইসলাম মমিনের হাতে ধরা পড়ে। এ সময় সে পালিয়ে যায়। পরদিন থানায় হ্যান্ডকাফটি হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনা প্রচার হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের সাধারণ মানুষ সোর্সদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বারদী, নোয়াগাঁও, জামপুর ও সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের নাম

ভাঙিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করায় বিভিন্ন এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

জামপুর মাঝেরচর এলাকার কলেজছাত্র আমিনুল ইসলাম বলেন, মনির হোসেন নামের এক সোর্স পুলিশের সঙ্গে থেকে প্রতিদিনই কোনো না কোনো মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে। গত এক সপ্তাহ আগে আমার নামে মামলা আছে বলে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে ২৫ হাজার টাকা দাবি করে। পরে আমি ৩ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে ছাড়া পাই।

নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান বলেন, পুলিশের সোর্সদের মধ্যে চিহ্নিত ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। পুলিশ যদি অপরাধী দিয়ে অপরাধ নির্মূল করতে চায় তাহলে অপরাধ নির্মূল হবে না বরং অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। অপরাধী যদি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে তাহলে পুলিশেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার বলেন, কোনো অপরাধীকে সোর্স ব্যবহার না করে জনপ্রতিনিধি ও কমিউনিটি পুলিশের কমিটির সদস্যদের ব্যবহার করা যেতে পারে।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম পিপিএম বলেন, পুলিশের সহযোগিতার জন্য সোর্স ব্যবহার করতে হয়। সোর্সরা যদি সাধারণ মানুষকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে তাহলে পুলিশ

অফিসারসহ সোর্সের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোর্সদের মধ্যে কেউ অপরাধী থাকলে তাদের বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

আরও পড়ুন
স্বদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত