ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

পাকিস্তানি পরমাণু হামলা ঠেকাতে পারবে না ভারত: রুশ বিশেষজ্ঞ

বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ১৯ মে ২০১৬   আপডেট: ১৩:০০, ২৫ মে ২০১৬

যুদ্ধ বাঁধলে পাকিস্তানি পরমাণুবাহী মিসাইল থেকে বাঁচার সুযোগ নেই ভারতের। এ দাবি করেছেন রুশ পরমাণু অস্ত্র বিশেষজ্ঞ পেতর তোপিচকানভ।

প্রসঙ্গত ইসরাইল ও রাশিয়ার সহযোগিতায় ভারত তার মিসাইল সিস্টেমকে উন্নত করার কাজে রত রয়েছে। তবে রুশ বিশেষজ্ঞের মতে তা পাকিস্তানি হামলা ঠেকানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার এ খবর দিয়েছে ভারতীয় পত্রিকা নবভারত টাইম্স।

পত্রিকাটি জানায়, ভারত-পাকিস্তান পরমাণু দ্বৈরথ প্রসঙ্গে কার্নেগি মস্কো সেন্টারের পরমাণু রহিতকরণ প্রকল্পের সিনিয়র গবেষক পেত্রো তোপিচকানভ বলেন, ভারত নিজের পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণে যে বিশাল মাত্রায় অর্থ খরচা করছে, সেই গতিতে দশ বছর ধরে তা করে গেলেও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বেঁধে গেলে প্রতিপক্ষের মিসাইল হামলা থেকে নিজেদের পুরোপুরি রক্ষা করতে পারবে না দিল্লি।

দক্ষিণ এশিয়ায় পরমাণু অস্ত্রের বিস্তাররোধ ও সম্ভাব্য যুদ্ধরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসরাইলের সহযোগিতায় ভারত তার ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করছে এবং রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ডিফেন্স সিস্টেম পাওয়ার চেষ্টায় রত রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাকিস্তানি মিসাইল থেকে নিজেকে রক্ষা করা তার জন্য অনেক দূরকা বাত।

প্রসঙ্গত, গত রোববার ভারতের অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স (এএডি) ইন্টারসেপ্ট মিসাইলের পরীক্ষা ও মাল্টি লেয়ার ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম নিয়ে ইসলামাবাদ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।

অপরাপর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সূত্রে ভারতীয় সমরকৌশলবিদরা হয়তো এই ভুল ধারণায় চালিত হতে পারেন যে তারা পাকিস্তানি মিসাইল হামলা থেকে পুরোপুরি নিরাপদ হয়ে গেছেন। এই ধারণায় তারা যখন পাকিস্তানের ওপর পরমাণু মিসাইল হামলার পরিকল্পনা কৌশলে ব্যস্ত থাকবে ততক্ষণে পাকিস্তানি পরমাণুবাহী মিসাইল তাদের ওপর হামলে পড়তে পারে। এর কারণ হিসেবে পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন- প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার মিসাইল টার্গেটগুলোর স্বল্প দূরত্বের বিষয়টা গুরুতর। কারণ, যে সময়টায় একটা মিসাইল ভারত থেকে পাকিস্তানে বা পাকিস্তান থেকে ভারতে আঘাত হানবে- ওই অল্প সময়ে তা ইন্টারসেপ্ট (গতিরোধ) করা সম্ভবপর হবে না মিসাইল প্রতিরোধ সিস্টেমের পক্ষে। স্বপল্প দূরত্বের কারণে প্রতিপক্ষের মিসাইলকে আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় খুব কম সময়ের জন্যই দেখা যাবে। অর্থাৎ শত্রুর মিসাইলের অবস্থান নির্ণয় করার আগেই হয়তো তা লক্ষ্য বস্ততে আঘাত হেনে বসতে পারে।

একইসঙ্গে নিউক্লিয়ার সাপ্লাইয়ার্স গ্রুপে (এনএসজি) ভারতের সদস্যপদ প্রসঙ্গে পেত্রো বলেন- এমন ক্ষেত্রে ভারতের ব্যাপারে দুনিয়া সাবধান হয়ে যাবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক কৌশল বিষয়ে রুশ নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মস্কো এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে চায় এবং এ এলাকায় আতঙ্ক দূরীকরণে সচেষ্ট আছে। তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে চলমান দীর্ঘকালের কৌশলগত সামরিক সহযোগিতা অংশীদারিত্ব সত্ত্বেও রাশিয়া চেষ্টা করছে একইসঙ্গে ইসলামাবাদ ও দিল্লির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে।

পাকিস্তানি প্রভাবশালী মিডিয়া দ্য ডন.কম জানায়, সম্প্রতি পরমাণু ইস্যু বিষয়ে অভিজ্ঞ ইসলামাবাদভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক গ্রুপ স্ট্রাটেজিক ভিশন ইন্সটিটিউট (এসআইভি) আয়োজিত ‘নন-প্রলিফারেশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্ট্যাবিলিটি ইন সাউথ এশিয়া: এ রাশিয়ান পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন পেতর তোপিচকানভ।

সেমিনারে এসভিআই সভাপতি ড. জাফর ইকবাল চিমা দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত সামরিক ভারসাম্যে ক্রমশ বিচ্যুতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার মতে এর কারণ হচ্ছে, প্রচলিত ও পরমাণু অস্ত্রে ভারতের ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠা যা পাকিস্তানের স্বার্থের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

নিউজওয়ান২৪.কম/একে

বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত