ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

পরমাণু যুদ্ধের ফলে কেমন হবে পৃথিবী? (ভিডিও)

নিউজওয়ান ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:২৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ২০:৫৮, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে যে কোনো সময় দু’দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা। এরই মধ্যে দু’দেশের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে রাখা হয়েছে। সমর বিশেষজ্ঞেরা যুদ্ধের কৌশল এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আগাম হিসেব শুরু করে দিয়েছেন।

আর পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এমন অবস্থায় দেখছেন, যদি সত্যিই পৃথিবীতে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় তাহলে কতোটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছে।

যাতে দেখানো হয়েছে, হাজার হাজার পরমাণু অস্ত্রের মধ্যে শুধু মাত্র ১শ’টি ব্যবহার করলেই পৃথিবী অন্তত একশ’ বছরের জন্য মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। হুমকীর মুখে পড়বে মানব সভ্যতা.. হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাত্র ১শ’টি পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারের ফলে ৫ মেগাটন ব্ল্যাক কার্বন দ্রুত বেগে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়বে। যে পরিমাণ কার্বন বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে তার ফলে গোটা পৃথিবীর আকাশ আচ্ছন্ন হয়ে যাবে। আর এর ফলে সূর্যের রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারবে না।

পরমাণু যুদ্ধের দ্বিতীয় সপ্তাহে চারিদিক কালো ধুলোর চাদরে ঢাকা পড়বে। পৃথিবীতে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে না পারায় দিন-রাতের পার্থক্য বোঝা যাবে না।

রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে পৃথিবীর ওজন স্তর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। আর ওজন স্তর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় পরিবেশে আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব ৮০ থেকে ১২০ গুণ বৃদ্ধি পাবে।

ধরণীতে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে না পারায় মাত্র দু’মাসের মধ্যেই তাপমাত্রা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাবে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে তা শূন্যেরও ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামতে পারে। অর্থাৎ মানুষের কারণেই পৃথিবীতে বরফ যুগ পুনরায় দেখা দিতে পারে।

এসময় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হবে। এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে। উদ্ভিদ তার স্বাভাবিকতা হারাবে। স্বাভাবিক বৃদ্ধি তো ব্যাহত হবেই, সেই সঙ্গে উদ্ভিদের ডিএনএ’র মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখা দেবে।

পরমাণু যুদ্ধের হাত থেকে যারা ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাবেন তাদের জন্য ভবিষ্যত হবে ভয়াবহ। উদ্ভিদ লোপ পাওয়ায় পরবর্তী দু’বছরের মধ্যে অন্তত দু’শ কোটি মানুষ খাদ্যের অভাবে মৃত্যুবরণ করবে। এসময় পৃথিবীর অধিকাংশ এলাকা প্রচণ্ড ঠান্ডা থাকবে। ফলে কোথাও মানুষের বসবাসযোগ্য স্থান থাকবে না।

অবশ্য পাঁচ বছর বাদে পরিবেশের কিছুটা উন্নতি ঘটবে। পৃথিবীর ওজন স্তরে কিছুটা স্বাভাবিকতা দেখা দেবে। তবে তা টিকে থাকা মানুষের জন্য সুখকর হবে না। তাদের ত্বকে ক্যান্সারের মতো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাবে।

বিশ বছর পর পৃথিবীর ওজন স্তরের আরও কিছুটা উন্নতি ঘটবে। ব্ল্যাক কার্বনের চাদর পাতলা হয়ে আসায় পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌঁছাবে। ফলে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পাবে। তবে তা পরমাণু যুদ্ধের আগের মতো স্বাভাবিক নয়।

এসময় প্রকৃতিতে আবারও উদ্ভিদের জন্ম নিতে দেখা যাবে। তবে তা খুবই কম। তাছাড়া সেসব উদ্ভিদের বৃদ্ধির হারও হবে অত্যন্ত কম। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, এসময় পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হবে। তবে তাতে ক্ষতিকর কার্বনের মাত্রা কম থাকবে।

পরমাণু যুদ্ধের ৩০ বছর বাদে পৃথিবীতে আবারও নানা উদ্ভিদের জন্ম দেখা যাবে। তবে বৃদ্ধি স্বাভাবিকের তুলনায় হবে অত্যন্ত ধীরে।

প্রকৃতি ৫০ বছর পর অনেকটাই স্বাভাবিক বলে মনে হবে। তবে অধিকাংশ এলাকায় পরমাণুর তেজস্ক্রিয়তা বজায় থাকবে। ফলে মানুষের জন্য পৃথিবীর উপরিভাগ তখনও নিরাপদ হবে না।

পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, পুরো পৃথিবী থেকে পরমাণু তেজস্ক্রিয়তা সহনীয় হয়ে আসতে একশ’ বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে মাত্র একশ’টি পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটলেই এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। সেখানে দুনিয়ায় শক্তিমান দেশগুলোর কাছে বর্তমানে রয়েছে অন্তত ১৬ হাজার পরমাণু বোমা। আর এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

নিউজওয়ান২৪.কম

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত