ঢাকা, ২৮ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

নিজ গ্রামের হতদরিদ্র প্রত্যেককে কোটিপতি করে গেলেন যে বিয়ারওয়ালা!

পরশপাথর ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২৭, ২৫ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০২:১৩, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

নিজগ্রাম সেরেআইল্স দেল কন্দাদোয় এক অনুষ্ঠানে গ্রামবাসীদের মাঝে এন্তানিনো

নিজগ্রাম সেরেআইল্স দেল কন্দাদোয় এক অনুষ্ঠানে গ্রামবাসীদের মাঝে এন্তানিনো

নিজ গ্রামের প্রতি ভালবাসা কতোটা গভীর হলে এমন করে মানুষ!

নিজের গ্রামের টান কাকে বলে তা দেখিয়ে দিয়ে গেছেন বিশ্বখ্যাত করোনা বিয়ারের প্রাণভোমরা স্পেনীয় বংশোদ্ভূত মেক্সিকান বিলিয়নেয়ার ফার্নান্দেজ এন্তোনিনো। মারা যাবার আগে তিনি এমন কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন যার ফলে তার গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন ২ মিলিয়ন পাউন্ডের মালিক।

জনহিতৈষী কাজের জন্য খ্যাত এই বিলিয়নেয়ার কখনোই মাতৃভূমি আর জন্মস্থানকে ভোলেননি। পঙ্গু ও প্রতিবন্ধী যুবকদের জন্য তিনি ছিলেন দরাজ হস্ত। তিনি স্পেনের লিওনে সোল্ট্রা নামে একটি কোম্পানি দার করান যাতে বিশেষভাবে প্রতিবন্দ্বীদের চাকরি দেওয়া হয়। একই রকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন মেক্সিকোতে স্ত্রী সিনিয়ার নামে।

দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বিয়ারের একটি হচ্ছে করোনা। এই বিয়ার কোম্পানি গ্রুপো মডেলোর মালিকদের একজন এন্তোনিনোর পরিবার ছিল একেবারে হতদরিদ্র। একসময় গরীবির কষাঘাতে বেদিশা হয়ে পড়ে পরিবারটি। ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে ১৪ বছর বয়সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে কাজের সন্ধানে বের হতে হয় কিশোর এন্তোনিনোকে।।

১৯৪৯ সালে ৩২ বছর বয়সে তিনি পাড়ি জমান স্পেনের একসময়কার উপনিবেশ মেক্সিকোতে। সেখানে গিয়ে তার কপাল ফিরতে থাকে। কোনো কিছুর পেছনে লেগে থাকার অসাধারণ মনোবল আর পরিশ্রমে ১৯৭১ সালে করোনা বিয়ার কোম্পানির সিইও হন।
পরবর্তী ৩৫ বছর (২০০৫ সাল পর্যন্ত) একটানা ওই কোম্পানিকে নেতৃত্ব দেন, বনে যান মালিকদের একজন। চলতি বছরের আগস্টে ৯৮ বছর বয়সে মারা যান এন্তানিনো।

অনেক কষ্টে ‘বড় মানুষ’ হওয়া এন্তানিনো গরিবীর জ্বালা আর অর্থের গুরুত্ব হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন। অনেকেই মনে করেন- এ কারণেই মরার আগে করা উইলে তিনি তার গ্রামের সবাইকে কোটিপতি বানিয়ে দিয়ে যান।

সম্প্রতি প্রকাশিত উইলের তথ্যে জানা গেছে- স্পেনের সেরেআইল্স দেল কন্দাদো গ্রামের ৮০ জন বাসিন্দার প্রত্যেকের জন্য তিনি রেখে গেছেন ২০ লাখ করে ব্রিটিশ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২০ কোটি টাকা)।

১৯১৭ সালে সেরেআইল্স দেল কন্দাদো গ্রামে জন্ম নেওয়া এন্তোনিনো তার গ্রাম ও এর বাসিন্দাদের কতোটা ভালবাসতেন তা তার মৃত্যুর পরেই জানা গেল। তার এই চমকে দেওয়া উদারতায় দুনিয়াজুড়ে মানুষ হতবাক। এটা নিশ্চিত বংশ পরম্পরায় তাকে মনে রাখবে নিজ গ্রামের লোকজন।

স্পেনের হতদরিদ্র জনঅধ্যুষিত নির্ভৃত ওই গ্রামের একমাত্র পানশালার মালিক ম্যাক্সিমিনো সানচেজ এন্তোনিনোর প্রতি কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত হয়ে বলেন, আগে আমাদের টাকা পয়সা বলতে কিছু ছিল না। এন্তোনিনো ছাড়া আমাদের কী হতো- আমি আসলে জানি না! মিরর.কম, এনবিটি

নিউজওয়ান২৪.কম/একে