ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

দাড়ি ফেলতে রাজি না হওয়ায় সৈনিক বরখাস্ত

ইত্যাদি ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ৬ জুন ২০১৬  

প্রতীকি চিত্র

প্রতীকি চিত্র

দাড়ি ফেলে দিতে রাজি না হওয়ায় এক সৈনিককে বরখাস্ত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। নয়া আইন মোতাবেক ভারতীয় সেনাবাহিনীতে শুধু শিখ সম্প্রদায় দাড়ি রাখতে পারবে। সে মোতাবেক কর্তৃপক্ষ মাকতুম হুসেন নামের ওই সৈনিককে দাড়ি ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তিনি তা মানেননি। তার যুক্তি ছিল, এজন্য তিনি নির্দিষ্ট শর্ত মেনে তার কমান্ডিং অফিসারের (সিও) অনুমতি নিয়েছিলেন আগে। ইন্ডিয়া টুডে, দ্য হিন্দু, আনন্দবাজার পত্রিকা এ খবর দিয়েছে।

সোমবার এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, উচ্চতর কর্তৃপক্ষের বারংবার নির্দেশেও দাড়ি কাটছিলেন না তিনি। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর ‘অনাকাঙ্খিত সৈনিক’ আখ্যা দিয়ে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে সেনাবাহিনী।

আনন্দবাজার আরও জানায়, আর্মি মেডিক্যাল কোরের সিপাহি মাকতুম হুসেন ১০ বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করছিলেন। সেনা সূত্রের খবর, যখন মাকতুম হুসেন চাকরিতে যোগ দেন, তখন তার দাড়ি ছিল না। পরে তিনি সিও’র কাছে আবেদন জানিয়ে ধর্মীয় কারণে দাড়ি রাখার অনুমতি চান। সিও প্রথমে মাকতুম হুসেনকে দাড়ি রাখার অনুমতি দেন।

তবে তিনি বলেন, দাড়ি রাখার পর নতুন করে ছবি তুলে আইডেন্টিটি কার্ড বানাতে হবে এবং কর্মজীবন শেষ হওয়া পর্যন্ত মাকতুমহুসেনকে দাড়ি রাখতে হবে। সেই নির্দেশ মেনে নিয়ে ওই মুসলিম সিপাহি দাড়ি বাড়াতে শুরু করেন। কিন্তু এর পর কমান্ডিং অফিসার জানতে পারেন, সেনাবাহিনীর কর্মীদের জন্য দাড়ি রাখা সংক্রান্ত বিধি সংশোধিত হয়েছে।

সিও মাকতুম হুসেনকে জানান, নয়া বিধি মোতাবেক দাড়ি কেটে ফেলতে হবে। কারণ, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মীদের মধ্যে শুধু শিখরাই ধর্মীয় কারণে দাড়ি রাখার অনুমতি পেতে পারেন। অন্য কোনও ধর্মে যেহেতু দাড়ি রাখা আবশ্যিক নয়, তাই শিখ ছাড়া অন্য কোনও ধর্মাবলম্বী কর্মীকে সেনাবাহিনী দাড়ি রাখার অনুমতি দিতে বাধ্য নয়।

কিন্তু অনুমতি বাতিল হওয়া সত্ত্বেও মাকতুম হুসেন দাড়ি না ফেলে কমান্ডিং অফিসার বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করে কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
ইতিমধ্যে মাকতুম হুসেনকে পুণের কম্যান্ড হাসপাতালে বদলি করা হয়। সেখানকার কর্তৃপক্ষও তাকে দাড়ি ফেলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু আগের মতোই তিনি নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন। এর পরে তাকে শোকজ করে সেনা কর্তৃপক্ষ।
সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় তাকে অবাধ্যতার অভিযোগে ১৪ দিনের জন্য ডিটেনশনে পাঠানো হয়। শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত। সেই তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়ে সশস্ত্র বাহিনী ট্রাইব্যুনালের কোচি বেঞ্চে। সবশেষে ট্রাইব্যুনাল মাকতুম হুসেনকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, মাকতুম সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন।

সেনা নৌ বিমান বাহিনীতে আলাদা নিয়ম

প্রসঙ্গত, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে কেবল শিখরা সু্বিন্যস্ত কায়দার দাড়ি আর আছাটা চুল রাখতে পারে। তবে সেনা, বিমান ও নৌ বাহিনীতে এ সংক্রান্ত নিয়মের কিছু হেরফের আছে।

যেমন, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বিশেষ করে নির্দিষ্ট কিছু রেজিমেন্টে শিখ সেনাদের দাড়ি রাখার অনুমোদন আছে। এয়ারফোর্স ডিউটি বা প্যারেডে ধর্মীয় প্রতীক বা চিহ্নের প্রকাশ অনুমোদন করে না। তবে ২০০২ সালের ১ জানুয়ারির আগে অন্তর্ভুক্ত মুসলিম সৈনিক যাদের আগে দাড়ি ছিল, তারা দাড়ি রাখতে পারে।

আর ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা চুল-দাড়িতে ব্যক্তিগত অবয়বে পরিবর্তন আনতে পারে।। কিন্তু এক্ষেত্রে সিও’র অনুমোদন আবশ্যিক।

তবে চিকিৎসাগত কারণে নিয়মের ব্যত্যয় করা যায়।

নিউজওয়ান২৪.কম/এলএ

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত