ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

ছাগলনাইয়ার ‘উভয় পক্ষের লোক’ যুবলীগ নেতা ফারুক!

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ২৭ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ১২:৪২, ২৩ মে ২০১৬

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ আর জামায়াত-শিবিরের আদর্শ এক নয়। তাই তাঁর গড়া দল বা দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ। বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় এই সমীকরণ আরও প্রকট ও পরিষ্কার। ক্ষমতার লড়াই আর রাজনৈতিক অবস্থানে এই দুটি পক্ষের অবস্থান দুই মেরুতে।

 

কিন্তু ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর ফারুক সম্ভবত সেই দলে পড়েন না। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ সাহেবের কন্যার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের বিশাল মহীরুহের নিচে থেকেও মাথায় ছাতা তুলে ধরেন স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির পক্ষের।

 

তার বিরুদ্ধে দলীয় আদর্শের পরিপন্থী কাজের অভিযোগ তুলেছেন জেলা আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। 

 

তাদের অভিযোগ, ওমর ফারুক বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা দলীয় আদর্শের বিপরীত।

 

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর লেখা এক খোলা আবেদনে এমন অভিযোগ আনা হয়। ‘নিবেদিত আওয়ামী লীগ সমর্থক’-এর পরিচয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো ওই আবেদনে অভিযোগ করা হয়, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠনের উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েও কাজী ওমর ফারুক উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কুখ্যাত রাজাকার নূর আহম্মদ মজুমদারের ব্যবসায়ীক অংশীদার এবং জালাল উদ্দীন মজুমদারের (সাবেক সভাপতি, ছাগলনাইয়া থানা বিএনপি) সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রেখেছেন। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের কয়েকজন নেতা ও উপজেলা বিএনপির সভাপতির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজী ওমর ফারুক ছাগলনাইয়া উপজেলায় ‘ছাগলনাইয়া এডুকেয়ার সোসাইটি’ এর মাধ্যমে ‘ছাগলনাইয়া মহিলা কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন।”

 

খোলা আবেদনপত্রে মহিলা কলেজটির কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুর আহম্মদ মজুমদারকে স্বাধীনতাবিরোধী ও অধ্যক্ষ ওমর ফারুককে জামায়াতে ইসলামীর রুকন বলে উল্লেখ করা হয়।

 

কাজী ওমর ফারুকের ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত ছবিতেও তাকে কলেজটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখে গেছে। কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় কলেজটির আয়োজনে মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন।

 

বিরাজমান পরিস্থিতিতে ছাগলনাইয়ার রাজনৈতিক মহলে আড়ালে আবডালে অনেকেই কাজী ওমর ফারুককে ‘উভয় পক্ষের লোক’ উল্লেখ করে থাকেন।  

 

এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ছাগলনাইয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা বলেন, “আসলে এসব বিষয়ে বললে নিজেদেরই বদনাম করতে হয়। আমরা আওয়ামী পরিবারের কিন্তু উনি (কাজী ওমর ফারুক) আমাদের পরিবারের হয়েও জামায়াতি সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি জামায়াতের সংগঠন ছাগলনাইয়া মহিলা কলেজ ছাড়াও ডিজিটাল স্কুল, মানারাতের সঙ্গেও সম্পৃক্ত।

 

ফলে সাংগঠনিকভাবে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।”

 

তিনি আরও বলেন, “সরকার যেখানে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজরদারিতে রাখছে সেখানে আমাদের একজন পদধারী নেতা তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় রাজনৈতিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”

 

বিষয়টি কাউকে জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে মৌখিকভাবে বলেছি তবে এখনও লিখিত অভিযোগ আনিনি।”

 

তবে ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইয়াজ আহমেদ মনে করেন- এতে দোষের কিছু নাই। তিনি বলেন, “যে কারও ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতেই পারে।

 

আমরা সাংগঠনিকভাবে এটি নিয়ে কোনও সমস্যা অনুভব করছি না।”

 

অভিযোগের বিষয়ে কাজী ওমর ফারুকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার সেল ফোনে একাধিকবার কল করেও ব্যর্থ হয়ে হয়ছে। তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর করা ওই দরখাস্তে আসন্ন ছাগলনাইয়া পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র হিসাবে মনোনয়নের ক্ষেত্রে ওমর ফারুকের বিষয়ে সাবাধানবাণী জানানো হয়।

 

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

আরও পড়ুন
স্বদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত