ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সর্বশেষ:

আসছে শব্দের চেয়ে ৫গুণ গতির যাত্রীবাহী বিমান!

বিজ্ঞান ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২৮, ১৯ মে ২০১৬   আপডেট: ১৩:২৬, ৯ জুন ২০১৬

হাইপারসনিক ফ্লাইটে একটি উড়োজাহাজ শব্দের চেয়ে পাঁচগুন দ্রুতগতিতে উড়ে যাবে। এই প্রযুক্তির আরেক নাম ম্যাক-ফাইভ। এই ম্যাক-৫ এর প্রযুক্তির একটি জেট মাত্র দুই ঘণ্টায় ১৭ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছে এবার!

বিস্ময়কর হলেও বাস্তবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে পরীক্ষাধীন একটি হাইপারসনিক উড়োজাহাজ। যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টার ফসল এটি। গত বুধবার অস্ট্রেলিয়ার বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন শুরু হয় স্বপ্ন-বাস্তবতার হাইপারসনিক প্রযুক্তির এই প্লেনের।

সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এর চূড়ান্ত সাফল্য মানুষের আরও একটি স্বপ্নকে সাফল্যের টুপি পরাবে। এর ফলে সিডনি থেকে লন্ডন যাওয়া যাবে মাত্র দুই ঘণ্টা সময়ে।

একটি মার্কিন-আষ্ট্রেলীয় মিলিটারি রিসার্চ টিম এ ধরনের দশটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সিরিজের অংশ হিসেবে বুধবারের ওই উড়ানের আয়োজন করে। সুপারজেট টেকনোলজির প্লেনের গতি ও উড়ান পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত এলাকাগুলি হচ্ছে পৃথিবীর বৃহত্তম ল্যান্ড টেস্টিং রেঞ্জ দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বুমেরা ও নরওয়ের অ্যানডোইয়া রকেট রেঞ্জ।

সফল পরীক্ষা শেষে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ বিজ্ঞানী অ্যালেক্স জেলিন্সকি জানান, এটা হবে একটি যুগস্রষ্টা প্রযুক্তি… এটা বিশ্ব বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাবে। এটা আকাশযাত্রার সময় ও ব্যয়কে অনেক কমিয়ে আনবে।

ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের বিজ্ঞানী মিকায়েল স্মার্ট এএফপিকে জানান, হাইপারসনিক ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট রিসার্চ এক্সপেরিমেন্টেশন (হাইফায়ার) গবেষক দলটি এখন এমন একটি ইঞ্জিন উন্নয়নের চেষ্টা করছেন যা ম্যাক-সেভেন গতিতে চলতে সক্ষম হবে। অর্থাৎ সেটি শব্দের চেয়ে সাতগুণ গতিতে চলতে সক্ষম হবে।

জানা গেছে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা শীর্ষ প্রতিষ্ঠান বোয়িং এবং জার্মানির স্পেস এজেন্সি ডিএলআর।

কনকর্ড-টুপোলেভের যুগ

প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিমান শব্দের গতির (সেকেন্ডে ১১৮০ ফুট) চেয়ে দ্রুতগতিতে চলাচল শুরুর পর যাত্রীবাহী উড়োজাহাজেও এই গতিবেগ যোগ হয় একটা সময়ে। এরমধ্যে ফ্রান্স-ব্রিটেন উদ্ভাবিত কনকর্ডের গতি ছিল ম্যাক-টু মাত্রার (Mach 2.04)। এটি শব্দের চেয়ে সর্বোচ্চ দ্বিগুণ গতিতে (ঘণ্টায় ২১৮০ কিলোমিটার) ছুটতে পারতো।

সর্বোচ্চ ১২৮ জন যাত্রী ধারণে সক্ষম কনকর্ড প্রথম আকাশে ওড়ে ১৯৬৯ সালে। তবে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন শুরু করে ১৯৭৬ সাল থেকে এবং তা জারি থাকে পরবর্তী ২৭ বছর।

আর একই ধারার সোভিয়েত রাশিয়া উদ্ভাবিত বাণিজ্যিক উড়োজাহাজটির নাম ছিল টুপোলেভ টিইউ-১৪৪। তবে এটি কনকর্ডের চেয়ে অনেক কম সময় চলমান ছিল। অবশ্য সোভিয়েত নির্মিত সুপারসনিক জেট এয়ারলাইনার টুপোলেভ আত্মপ্রকাশ করে কনর্ডের আগে। টুপোলেভের প্রথম ফ্লাইটটি আকাশে উড়ে ১৯৬৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মস্কোর কাছের আকাশে। কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার পর মাত্র ৫৫টি ফ্লাইট সম্পন্ন করা টুপোলেভের সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অপরদিকে, ২০০০ সালের ২৫ জুলাই এয়ার ফ্রান্সের একটি কনকর্ড দুর্ঘটনায় এর ১০০ যাত্রী ও নয় ক্রুর সবাই নিহত হন। এছাড়া ভূমিতে থাকা চার ব্যক্তিও মারা যান ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়। আরও বেশ কিছু ছোটখাট দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য কারণের সঙ্গে এই বড় দুঘটনার পর কথা উঠে কনকর্ড সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার। এরই সূত্র ধরে একই বছরের ২৬ নভেম্বর কনকর্ড উড়োজাহাজ শেষবারের মতো যাত্রী নিয়ে আকাশে উড়ে। তারপর ব্রিটেন ও ফ্রান্স উভয় দেশই বন্ধ করে দেয় কনকর্ড সার্ভিস। এমিরেটস২৪৭

নিউজওয়ান২৪.কম/একে

মোবাইল-পিসি-টেক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত