ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

অভাবটা শুধু মাত্র হুইল চেয়ারের

পরশপাথর ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ২৪ অক্টোবর ২০১৭  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

জন্ম থেকে শারিরীক প্রতিবন্ধী হলেও জীবন যুদ্ধে হার মানেননি ওহাব আলী। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের সুবলপাড়ের বাসিন্দা ওহাব আলীর পদচারণা সুস্থ্-সবল মানুষের মতোই। জন্ম থেকেই দু`পা অকেজো। বয়সের সঙ্গে দেহের বৃদ্ধি হয়নি তেমন। কিন্তু থামেননি তিনি। কখনো হামাগুড়ি দিয়ে আবার কখনো নিজের তৈরি ৩ চাকার বেয়ারিং গাড়িতে চড়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মযজ্ঞ।


তবে জানালেন, বয়সের কারণে চলা ফেরায় কষ্ট হলেও ছেলে মাঝে মধ্যে সহযোগিতা করে। বহুদিন চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে গিয়েও একটি হুইল চেয়ার মেলেনি।

দু`হাতে নিপুন ভাবে বাঁশ দিয়ে তৈরি করেন ডালি, কূলা, হরপা। তার তৈরিকৃত জিনিস বাড়ি থেকেই বিক্রি করেন। অবসর সময়ে সুবলপাড় বাজারে বসান পান সুপারীর দোকান। সামান্য কিছু চাষের জমি আছে তার। সুস্থ সবল মানুষের মতো চাষও করেন তিনি।

গ্রামের সকল সমস্যা সমাধানে আর দশজনের মতো তিনিও একজন সদস্য। অংশগ্রহণ করেন বিচার-শালিসে। প্রতিবন্ধী না ভেবে স্বাভাবিক মানুষ ভাবেন নিজেকে। নিজের গ্রাম এবং আশপাশের মানুষের কাছে সৎ মানুষ হিসেবে নাম কুড়িয়েছেন।

ওহাব আলী জানান, বয়স ৪৫ পেরিয়েছে। এই অবস্থায় আগের মতো পরিশ্রম করতে পারি না। এরপরও স্ত্রী নুর বানু ও এক সন্তান নুর ইসলাম (১৬) নিয়ে সুখেই আছি। তবে তিনি বলেন, বয়স বাড়ছে। এ বয়সে একটি হুইল চেয়ার পেলে চলাচলের অনেক সহজ হতো।

ওহাব আলীর স্ত্রী নুর বানু বলেন,আমার স্বামী কর্মঠ ও পরিশ্রমী। জমি বলতে পৈত্রিকভাবে পাওয়া বাড়িভিটে টুকুই। কিন্তু তার পরিশ্রমে আজ মোটামুটি সংসারে স্বচ্ছলতা বিরাজ করছে। আমি ভাগ্যবতি এমন পরিশ্রমী লোকের সংসারে এসে।

একই গ্রামের আমিনুল ইসলাম, দুলাল, একাব্বর বলেন, আসলে ওহাব আলীকে আমরা কখনো প্রতিবন্ধী ভাবিনি। ছোট বয়স থেকে তার কাজকর্ম দেখে আসছি তাকে সবল মানুষ হিসেবে দেখি আমরা।

কেদার ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার বলেন, ওহাব আলীর প্রতিবন্ধী ভাতা রয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসে তার নামে হুইল চেয়ারের আবেদন করা হয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সালেকুল ইসলাম জানান, হুইল চেয়ারের চাহিদার তালিকা জেলায় দেয়া আছে। বরাদ্দ আসলে দেয়া হবে।